‘আমি যখন বন্দুক নিয়ে পজিশন নিই, তার একটু দূরে আমাদের সহযোদ্ধা তোজাম্মেলও পজিশন নিয়েছে। সেটা সন্ধ্যার একটু আগে। কিছুক্ষণের মধ্যে তোজাম্মেল হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেল। তার মানে হানাদার বাহিনীর একটি গুলি এসে তার শরীরে বিঁধল। সেখান থেকে তাকে অন্যরা নিয়ে গেল। কিন্তু কোথায় নিয়ে গেল, তা আমরা সেই সময় জানি না। আমি শুধু পজিশনে থেকে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য গুলি চালিয়ে যাচ্ছি। পরে শুনতে পেলাম তোজাম্মেল সুস্থ আছে। এ কথা শুনে মনটা ভরে গেল।‘

একাত্তরের দিনগুলোতে যুদ্ধক্ষেত্রে চষে বেড়ানো বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিমের স্মৃতিতে ফুটে ওঠে কিশোরকালের সাহসী দিনগুলোর কথা। রণাঙ্গনের রক্তঝরা সেসব দিনের কথাগুলো তরুণ প্রজন্মকে জানাতে আজ থাকছে এই রণবীরের জীবনকাহিনি।

বয়স সবে ১৬ বছরের কাছাকাছি। টগবটে তারুণ্য, উড়নচণ্ডী কিশোরের মনে ছিল একটাই কথা, কীভাবে দেশকে মুক্ত করবেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ডাক থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা তার যুদ্ধে যাওয়ার জন্য মনকে ব্যাকুল করে তোলে। এরপরই ট্রেনিং শেষে সম্মুখ যুদ্ধে লড়তে থাকা অনেকের ভিড়ে রেজাউল করিমও ছিলেন তাদের একজন।

যুদ্ধের জন্য এক কিশোরের প্রশিক্ষণ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। ভয়াল রাত। চারদিকে গোলাগুলির শব্দ। মানুষ এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে। অনেকের মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক। সবাই দেশ বাঁচানোর জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

রেজাউল করিম বলেন, আমি তখন বগুড়ার সোনাতলা হাইস্কুলের ম্যাট্রিক (এসএসসি) পরীক্ষার্থী। আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল এপ্রিল মাসে। কিন্তু তার আগে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আমার বাবা তখন পোস্টমাস্টার ছিল। ২৬ মার্চের আগে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। তখন আমি আমার বন্ধুর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করি। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আমি কিছুদিন সোনাতলায় থেকে এরপর হেঁটে গ্রামের বাড়ি জামালগঞ্জের পূর্বমাতাপুরে চলে আসি।

বাড়িতে বসে রেডিওতে খবর শুনতাম। আমাদের বাসায় রেডিও ছিল না। মামার বাড়ি থেকে রেডিও এনে আমাদের পূর্বমাতাপুর মন্ডলপাড়ার মানুষদের নিয়ে রেডিওর খবরগুলো নিয়মিত শুনতাম। একদিন কয়েকজন বন্ধু একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নিলাম যে ভারতে যাব প্রশিক্ষণে এবং যুদ্ধে অংশ নেব। আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে। এরপর আমাকে ও আমার বন্ধু ওমর ফারুককে সবাই দায়িত্ব দিল কীভাবে ভারতে যাওয়া যায়। সে সময় আমাদের পাশের গ্রামে তোতা নামের একজন ছিল। যারা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ করতে চায়, তাদের ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তোতা সহযোগিতা করত।

তখন আমি ও ফারুক তার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তোতা আমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন। তারপর আমি, আমিনুর, আশরাফ, শফি, তসলিম উদ্দিন, আবু তালেব, সামাদ, আমজাদসহ ১০ থেকে ১২ জন ভারতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।

২০ টাকা নিয়ে ভারতের পথে
মা-বাবাকে বললাম যুদ্ধে যাব। আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর ভক্ত ছিলেন। যদিও তখন সরকারি চাকরি করে বঙ্গবন্ধুর কথা বললে সমস্যা হতো। তারপর তারা অনুমতি দিলেন। বাবা তখন ঠিকমতো বেতন পেতেন না। আমাকে টাকাও দিতে পারলেন না। মা ২০ টাকা জোগাড় করে দিলেন। সেই টাকা নিয়ে কানুপুর গেলাম।

রেজাউল করিম বলেন, কানুপুরে সবাই একত্র হয়ে তোতার কথামতো গয়েশপুর যাই। তখন রাত ১১ থেকে ১২টা বাজে। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ৫০ থেকে ৬০ জন একত্র হই। তারপর তোতা এসে আমাদের নিয়ে রওনা দিলেন। ঠিক ভোর রাতে অর্থাৎ ফজরের আজানের সময় আমরা ভারতের মাটিতে প্রবেশ করি। তারপর কুরমাইল ক্যাম্পে গেলাম। ওই ক্যাম্পের পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক আবু সাঈদ। তিনি আমাদের ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দিলেন না। কারণ, আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কেউ ছিল না। তখন তোতা আমাদের ক্যাম্পের পাশে বসিয়ে রেখে রুকিন্দীপুরের আলাউদ্দিন সরদারকে খুঁজতে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আলাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। তিনি আমাদের সবাইকে ওই পরিচালকের কাছে নিয়ে গেলেন এবং পরিচয় করিয়ে দিলেন। পরিচালক তালিকায় আমাদের নাম লিখে নিলেন। সেই ক্যাম্পে আমরা ৭-৮ দিন থাকলাম। তারপর ক্যাম্পটি শিফট করে মালঞ্চাতে নিয়ে যাওয়া হলো।

৩৩ দিনের গেরিলা প্রশিক্ষণ
গেরিলা প্রশিক্ষণ করি ২১ দিন। এরপর আমাদের পতিরামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮-৯ দিন থাকার পর শিলিগুড়ির পানিঘাটাতে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ইকো ক্যাম্পে। ওই ক্যাম্পের পরিচালক ছিলেন লে. চঞ্চল সিংহ। আমার এফএফ নম্বর ছিল ৯১৭৮। আমরা সবাই একই ক্যাম্পে ছিলাম। সেখানে আমাদের সাত প্রকারের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কীভাবে ব্রিজ, রাস্তাঘাট উড়িয়ে দেওয়া যায়, শত্রুদের ওপর হামলা করে সহজেই ঘায়েল করাসহ ইত্যাদি।

প্রশিক্ষণ শেষে আমাদের প্রত্যেককে ২১ টাকা করে দেওয়া হয়। এরপর আমাদের ৭ নং সেক্টরের অধীনে তরঙ্গপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর থেকেই আমরা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিলাম। হঠাৎ সেখানকার কমান্ডার লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান, লে. আওয়াল চৌধুরী আমাদের জানালেন, তোমরা গেরিলা নয়, সম্মুখ যুদ্ধে যাবে। আমরা বললাম, স্যার এই ২১ দিনের ট্রেনিং নিয়ে আমরা সম্মুখ যুদ্ধে কেমনে যাব? এই বলে প্রতিবাদ ও কয়েক দিন ধর্মঘট করি। এর মধ্যে কমান্ডার আমাদের ডেকে বলেন, তোমরা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও। তোমাদের কোথায় পাঠানো হবে তা জানার দরকার নেই। যুদ্ধের জন্য এসেছ, যুদ্ধ করবে। আমরা স্যারকে বললাম, ২১ দিনের ট্রেনিং নিয়ে কীভাবে সম্মুখ যুদ্ধে যাব? তখন তিনি আমাদের আরও ১০-১২ দিন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন।

প্রশিক্ষণ শেষে আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী মহদীপুর বর্ডারে পাঠানো হলো। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে আমাদের ১০০ রাউন্ড গুলি ও অস্ত্র দেওয়া হয়। ট্রেনিং অবস্থায় কমান্ডারের আওয়ার স্যারের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। তখন আমি স্যারকে বললাম, স্যার, আমাকে এসএলআর দেন। তখন তিনি আমাকে একটি এসএলআর দিলেন। যার নম্বর ছিল ৩৩৯৯। এরপর আমাদের প্রত্যেকটি গ্রুপে তিনজন করে মুক্তিযোদ্ধারা রাখা হলো এবং ভাগ ভাগ করে ৭ নম্বর সেক্টরে ছড়িয়ে দেওয়া হলো।

যুদ্ধক্ষেত্রে সহযোদ্ধাদের হারানো
যুদ্ধের মাঠে আমাদের সামনে আমজাদ ভাইয়েরা ছিলেন। দুই-তিন দিন পর আবার আমাদের সামনে দেওয়া হলো। একদিন আমাদের গ্রুপ ক্যাপ্টেন লে. জাহাঙ্গীর আসলেন। তিনি বললেন, তোমরা কয়জন আছ? আমরা বললাম স্যার তিনজন আছি। তিনি গুলি ও অস্ত্র সম্পর্কে জানলেন। এরপর আমাদের বললেন, ভয়ের কিছু নেই। তোমরা একটা কথা মনে রাখবে, শত্রুদের জানিয়ে দিতে হবে তোমরা যুদ্ধের মাঠে আছ। এ জন্য তারা দশটা গুলি করলে তোমরা একটা করবে। তোমরা একেবারে সব গুলি শেষ করবে না।

রেজাউল বলেন, কয়েক দিন পর শিবগঞ্জের দিকে অগ্রসর হলাম। যাওয়ার সময় মাইন্ডগুলো সাবধানে দেখে দেখে গেলাম। পথে আমাদের খুবই ক্ষুধা লেগেছিল। তখন কানসাট হাই স্কুল এলাকায় ছিলাম। কমান্ডার বললেন, তোমরা কিছু খাওনি। সামনের গ্রামে মানুষের থেকে খাবার চেয়ে নিয়ে খাও। আমি সামনে অগ্রসর হতে থাকি। এরপর আমরা গ্রামে গিয়ে খাবার চেয়ে নিয়ে খেলাম। খাবার খেয়ে আমরা যখন শিবগঞ্জ থানা এলাকায় তখন জানলাম হানাদাররা সেখানে নেই। তারা পিছু হটে গেছে।

রণক্ষেত্রের রোমহর্ষক স্মৃতি
সেখানে রাত থেকে পরদিন আবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে এগোতে থাকলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছার আগেই আমরা নদীর উত্তর পাড়ে ছিলাম। তখন ওপার থেকে শুরু হলো গুলিবর্ষণ। হানাদার বাহিনীরা গুলির সাথে মর্টার শেল নিক্ষেপ করতে লাগল। তখন আমরা পজিশন নিলাম। একটানা ৮ থেকে ৯ দিন সেখানে যুদ্ধ করি।

আমরা একটা গাছের নিচে পজিশন নিয়েছি। তখন পাকিস্তানি বাহিনী ওপার থেকে শেল নিক্ষেপ করতে থাকল। একটি শেল আমাদের সহযোদ্ধা জামালগঞ্জ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সহযোদ্ধা হাতেমের মাথায় পড়ে। মাটিতে পড়ে যায় সে। এর কিছুক্ষণ আগে হারিয়েছি ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে। দুজন শহীদ হয়। আমরা পাল্টা প্রতিরোধ করি। এ যুদ্ধে হানাদাররা পিছু হটে গেল। আমরা ডিঙিনৌকায় করে নদী পার হয়ে শহরে ঢুকলাম। শহরে ঢুকেই শুনি হানাদাররা শহর ছেড়ে চলে গেছে। সেদিন হানাদারমুক্ত হয়ে শহর।

সবার মুখে ‘জয় বাংলা'
রেজাউল বলেন, আমরা ১৫ ডিসেম্বর সারা দিন শহরে ঘুরলাম। লোকজন আমাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিল। সবার মুখে একটাই স্লোগান ছিল, 'জয় বাংলা'। সে সময় মাইকিং করে আমাদের জানানো হলো তোমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা আছ, সবাই ইপিআর ক্যাম্পে একত্র হও। আমরা সবাই সন্ধ্যায় ক্যাম্পে একত্র হলাম। সেখানে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান, কাইয়ুম, আওয়াল, গিয়াস আমাদের জানালেন, তোমরা আর যুদ্ধে যাবে না। কারণ, হানাদার বাহিনীরা আত্মসমর্পণ করেছে।

এরপর বুকভরা আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরি। বাড়ির সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। কারণ আমি ফিরব কি না এটা নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তায় ছিল।

৫০ বছরে বাংলাদেশ
বড় দুঃখ হলো যে স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারালাম। আমরা তাকে রক্ষা করতে পারিনি। এটি অত্যন্ত কষ্ট ও বেদনাদায়ক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম দুঃখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন সোনার বাংলা ও শোষণমুক্ত দেশ গড়ার। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা সেটা পাইনি। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটা আধা মুক্তিযোদ্ধা ও আধা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশ শাসন করেছে। ফলে দেশটাকে তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এরপর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আগের অবস্থায় ফিরে এনেছেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলতে চাই, ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান আমাদের দিয়ে গেছেন, সেই সংবিধান চালু করা হোক। এটা আমার মনেপ্রাণে চাওয়া।

নতুন প্রজন্মের প্রতি নির্দেশনা
এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে আমার একটাই আবেদন ও উপদেশ, তোমরা এই দেশটাকে ভালোভাবে জানো। মুক্তিযুদ্ধকে তোমরা জানার চেষ্টা করো। এই দেশকে ভালোবাসতে হবে। স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে। তাহলে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

যে 'জয় বাংলা' বলে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তাম, যুদ্ধে উজ্জীবিত হতাম, জয়লাভ করলাম, সেই জয় বাংলাকে অন্যরা একটা দলের ভাবছে, এ জন্য এটা তারা বলে না। এটা আমরা চাইনি। জয় বাংলা স্লোগান এ দেশের ১৭ কোটি মানুষ বলবে। কিন্তু সেটা হলো না। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা চেয়েছি। সেটাও হয়নি। এখনকার মানুষের ধর্ম নিয়ে এমন অবস্থা সৃষ্টি করে সেটা শুনলে খুবই দুঃখ ও কষ্ট লাগে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জয়পুরহাট জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জয়পুরহাট জেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধা ৯০০ জনের মতো। এর মধ্যে ৪০০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকিদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ। সবাই ভাতা পাচ্ছেন। দু-একজনের সমস্যা থাকায় তারা ভাতা পান না। এ ছাড়া জেলায় পাঁচটি কমপ্লেক্স ভবন আছে। এগুলোর মার্কেট থেকে প্রাপ্ত টাকাও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সমান ভাগে বণ্টন করা হয়। একেবারে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মো. রেজাউল করিম ১৯৫৫ সালের ২৩ মে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত সিয়াজ উদ্দিন মন্ডল একজন পোস্ট মাস্টার ছিলেন। মা মৃত নূর নাহার বেগম ছিলেন গৃহিনী। বাবা-মায়ের সংসারে ৯ ভাই-বোনের মধ্যে রেজাউল করিম ছিলেন ৩য় সন্তান। তিনি কালাই ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

তিনি ১৯৮১ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে বিবাহিত জীবনে তার স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম একজন সমাজকর্মী হিসেবে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় কর্মরত আছেন। রেজাউল করিম ও নুরুন্নাহার বেগম দম্পতির বড় ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. নাজিম মাহমুদ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য কানাডায় আছেন। ছোট মেয়ে সাজিয়া আফরিন মম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন। রেজাউল করিম তার পরিবার নিয়ে জয়পুরহাট শহরের নতুনহাট সরদারপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন।

এনএ