ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রি, কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে
নীলফামারীর ডোমারে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী সাধারণ যাত্রী ও এলাকাবাসীর দাবি, কালোবাজারিদের সঙ্গে স্টেশনের বুকিং সহকারী পরোক্ষভাবে জড়িত।
জানা গেছে, ডোমার রেল স্টেশনের বরাদ্দ করা আসন সংখ্যার তুলনায় যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। চাহিদার তুলনায় কম আসন থাকায় যাত্রীদের বাধ্য করে অতিরিক্ত দামে টিকিট কিনতে হয়।
বিজ্ঞাপন
স্টেশন মার্কেটের বিভিন্ন দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্টেশন মাস্টারদের একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কালোবাজারিরা স্টেশনের বুকিং সহকারীর সহযোগিতায় টিকিট সংগ্রহ করে চড়া দামে সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিক্রি করছেন বলে জানান এলাকাবাসী। তাদের দৌরাত্ম্যের কাছে যাত্রীরা জিম্মি।
ট্রেনের যাত্রীদের বড় একটি অংশ অনলাইন সুবিধার বাইরে। বেশিরভাগ সময় অগ্রিম টিকিটের জন্য কাউন্টারে যোগাযোগ করেও টিকিট পাওয়া না যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামে কালোবাজারে টিকিট কাটতে হয়। কালোবাজারিচক্র অনলাইনে সক্রিয় হয়ে একযোগে টিকিট কেটে নেয় বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ডোমার স্টেশনসহ চিলাহাটি, নীলফামারী, সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর স্টেশনের নীলসাগর ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির কাছে মজুদ থাকে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক যাত্রী।
বিজ্ঞাপন
লিপন ইসলাম নামে এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাউন্টার ও অনলাইনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়েছি ১৭০০ টাকা দিয়ে ২টা টিকিট কিনতে।
নাজমুল হক নামের ঢাকাগামী এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্টেশন কাউন্টারে ডোমার থেকে ঢাকা যাত্রার টিকিট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারিদের কাছে চড়া দামে ডোমার স্টেশনের পর্যাপ্ত টিকিট পাওয়া যায়।
হাবিবুর রহমান নামে অপর এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাগ্য ভালো থাকলে অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায়। তবে সেটা কঠিন ব্যাপার। অনলাইনে টিকিট ছাড়ার এক বা দুই মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। কেউ কেউ সিট বরাদ্দ পেয়ে টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দেখে টিকিট বিক্রি শেষ।
ডোমার রেল স্টেশনমাস্টার মোসাদ্দেক আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালোবাজারি কখনো আমাদের চোখে পড়েনি তাই কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে ইতিপূর্বে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
তিনি আরও বলেন, আসন বৃদ্ধি পেলে কালোবাজারি কমে যাবে বলে আমরা আশাবাদী। এ ছাড়া কালোবাজারি যেই হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তির দাবি জানাই।
টিকিট কালোবাজারির ব্যাপারে ডোমার থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রেলস্টেশন জিআরপি পুলিশের অধীন। তারা চাইলে অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করব।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিকিট কালোবাজারির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। চক্রটি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বুকিং ক্লার্কদের সহযোগিতায় এ অপকর্ম করে যাচ্ছে। আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আশা করি, দায়ীদের আটক করতে পারব।
আরআই