‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মাজহারুল ইসলাম মনির মুন্সির সংবাদ সম্মেলন

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপরীতে একজোট হয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন পাঁচজন বিদ্রোহী প্রার্থী। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) নিয়ামতি ইউনিয়নের বাংলাবাজার নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মাজহারুল ইসলাম মনির মুন্সি।

পরে তার সংবাদ সম্মেলনে সমর্থন দেন চশমা প্রতীকের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী কামাল হোসেন তালুকদার, আনারস প্রতীকের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সোহরাব হোসেন মৃধা, মোটরসাইকেল প্রতীকের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মোহাম্মদ আল আমীন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের হুমায়ুন কবির।

লিখিত বক্তব্যে মাজহারুল ইসলাম মনির মুন্সি বলেন, নৌকার প্রার্থী মতিউর রহমান বাদশার ফুফাতো ভাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রভাব বিস্তার করে ভোট ডাকাতির চেষ্টা করছেন। তিনি প্রশাসনকে বাদশার পক্ষে কাজ করানোর চেষ্টায় লিপ্ত। এসব বিষয় রিটার্নিং কর্মকতার্সহ প্রধান নিবার্চন কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।

তিনি বলেন, প্রশাসনের কাছে পাঁচ প্রার্থী ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে ১১টি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণাা করা, বহিরাগত ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী গ্রেফতার, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীদের সমান সুযোগ দেওয়া, অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার, প্রতিটি কেন্দ্রে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন, ভোটের আগে ইউনিয়ন বহিরাগতমুক্ত করা।

সংবাদ সম্মেলনের পরপরই বাংলাবাজার সড়কে এসে নেতাকর্মী নিয়ে হাজির হন আওয়ামী লীগের অপর ৩ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ও চরমোনাই পীরের প্রার্থী। এ সময় সড়কে অবস্থান নিয়ে ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হাতে হাত রেখে প্রচারণা শুরু করেন।

‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, নৌকা প্রার্থীর লোকজন ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। নৌকার বহিরাগত লোকজন হোন্ডা মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। ভোটে জালিয়াতি প্রতিহতে তারা সব প্রার্থীরাই ঐক্যবদ্ধ।

অপর ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সোহরাব হোসেন মৃধা বলেন, নিয়ামতিতে ভোট জালিয়াতি করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া হাতপাখা প্রতীকের হুমায়ুন কবিরও অন্যসব প্রার্থীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

তবে নিয়ামতি ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিউর রহমান বাদশা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকার লোকজনকে হুমকি দিচ্ছেন। সোহরবা মৃধার এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তার ফুফাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগও উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন এসব প্রপাগান্ডা।

প্রসঙ্গত, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মনির মুন্সি, কামাল হোসেন তালুকদার ও সোহরাব হোসেন মৃধাকে ২০ ডিসেম্বর বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস স্বাক্ষরিত সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে ওই বহিষ্কারাদেশ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বহিষ্কারাদেশের দুই দিন পরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে নামলেন। প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২৬ ডিসেম্বর নিয়ামতি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর