গাজী হাসান খসরু খান। সিরাজঞ্জ পৌরসভার রহমতগঞ্জ মহল্লার বাসিন্দা তিনি। বাবা মৃত আব্দুল গাফার খান ও মাতা খোদেজা খাতুন। মাত্র সাড়ে ১৪ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মা-চাচি, চাচা ও ছোটভাইয়ের কাছ থেকে ২৭ টাকা ৮ আনা নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যান। বাবা তৎকালীন আনসার বাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট হওয়ার সুবাদে প্রথম অস্ত্র চালানো শেখেন তার কাছ থেকেই। পার্শবর্তী এলাকার চান মিয়ার সহযোগিতায় যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে মানিকের চর হয়ে ভারতের রৌমারীতে প্রথম প্রশিক্ষণ নিতে যান তিনি। সেখানেই মুক্তিযুদ্ধের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। পরে যুদ্ধ করেছেন বিভিন্ন সেক্টরে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৭ নং সেক্টর। আর  এসব অভিজ্ঞতার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি ঢাকা পোস্টকে।

মূলত পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। তবে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সহ কমান্ডারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য। এ ছাড়া রহমতগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি। এবার দিয়ে তিনি টানা ৮ বার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সাড়ে ৮শ পরিবার নিয়ে গঠিত রহমতগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতির দায়িত্বে আছেন তিনি।

’৭০-এর নির্বাচনের আগে নৌকার প্রতীক নিয়ে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন শুরু করলেন তখন সিরাজগঞ্জে মজিদ নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী ছিল। মজিদ তখন মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও তাকে নিয়ে নানা রকমের গান প্রচার করত। তার প্রচারেই আমি উদ্বুদ্ধ হই। তার মুখেই আমি প্রথম বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সে গান গেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আর মজিদের প্রচারেই আমি অনুপ্রাণিত হই। ওই সময় কিছুটা বুঝতাম যে আমরা নিপীড়িত-নির্যাতিত হচ্ছি। এ কারণে বয়স কম হলেও কিছু না ভেবেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।

যুদ্ধে যাওয়ার চিন্তা করলেও কার সঙ্গে যাব সেটা ভাবতে থাকি। পরে পার্শবর্তী এলাকার বড়ভাই চান মিয়ার সহযোগিতায় মানিকের চর হয়ে ভারতের রৌমারীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে যাই। মায়ের কাছ থেকে ২০ টাকা, চাচির থেকে ৫ টাকা, চাচার থেকে ২ টাকা ও ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে আট আনা নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যুদ্ধে যাই। নৌকাতে একটানা ৫ দিন ৫ রাত যাওয়ার পথে ৩ তিন পর নৌকায় শাজাহান নামে এক সহযাত্রী আমাকে বলেন, তুমি তো অনেক ছোট, যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সিলেক্ট হবা কি না এটাই সন্দেহ। তখন দুচোখে অন্ধকার দেখছিলাম। আমাকে মুক্তিযুদ্ধে না নেওয়া হলে কীভাবে এই পথে ফিরে আসব এটা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ি। 

তখন ইসমাইল নামে একজন বলল, কান্দিস না দেখা যাক। যখন রৌমারীতে ফলিং হয়ে দাঁড়ালাম তখন সর্বপ্রথম লাইন থেকে আমাকেই টেনে নেওয়া হলো। আমি ভেবেছিলাম যে আমাকেই প্রথম বাদ দেওয়া হলো। কিন্তু পরেই দেখি যেখানে টানা হলো সেই লাইনটিই ধিরে ধিরে বড় হচ্ছে। তখন মনের ভেতর সাহস হলো যে আমাকে নেওয়া হয়েছে। সেখানে দুদিন থাকার পর পাশে একটি পশু হাসপাতালে ট্রেনিংয়ের জন্য যাই।

প্রশিক্ষণের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথম অস্ত্রশিক্ষা বাবার কাছেই। পরে রৌমারীতে যুদ্ধের জন্য নির্বাচিত হয়ে দেখি সেখানে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। শুধু প্যারেড-পিটি করানো হয়। ওখান থেকে ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো প্রশিক্ষণের জন্য। দেখলাম এখানে হবে না। তাই আবার দেশে ফিরে আসলাম। ৩ দিন বাড়িতে থেকে ৪ নং গেরিলা ক্যাম্পের অধিনায়ক ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ছোট হওয়ায় প্রথমে আমাকে নিতে চান না। দেশের এই অবস্থা দেখে বাবার অফিসের ৩ জন আনসার সদস্য পালিয়ে যাওয়ার সময় বাবার কাছে ৩টি রাইফেল রেখে যায়। তখন গেরিলা ক্যাম্পের অধিনায়কে আমার কাছে থাকা ৩টি অস্ত্রের কথা জানালে সেগুলো দেওয়ার শর্তে আমাকে মুক্তিযুদ্ধে নিতে রাজি হন।

৪ নং গেরিলা ক্যাম্পটি কোনো জায়গাতেই স্থায়ী হতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আজ সিরাজগঞ্জের একটি বিলে তো কাল সেখান থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে অন্য স্থানে প্রশিক্ষণ হতো। সে সময় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন আজিজ নামে এক সদস্য। তিনিই মূলত প্রশিক্ষণ দিতেন। আর এভাবেই আমরা তার নেতৃত্বে ২৮-২৯ দিন অস্ত্র চালানো ও যুদ্ধের নানা কলা-কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিই।

৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় দলের সেক্টর কমান্ডার ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে ও সেকেন্ড ইন কমান্ড (এইট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) আজিজ ওস্তাদের তত্বাবধানে আমরা যুদ্ধ শুরু করি জানিয়ে তিনি বলেন, ইসমাইল হোসেন অধিনায়ক থাকলেও মূলত অস্ত্রবিদ্যা ও কলা কৌশল আজিজ ওস্তাদই শেখাতেন। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, ভদ্রঘাট ও সদরের শৈলাবাড়ি এলাকায় যুদ্ধ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, মূলত শৈলাবাড়িতে টানা দুই দিনের যে যুদ্ধ হয় সেখানে ঘটেছিল লোমহর্ষক ঘটনা। হারিয়েছিলাম আমার কাছের সহযোদ্ধা ও যুদ্ধে আমাকে আগলে রাখা বড়ভাইকে।

সেদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ডিসেম্বরের ৯ তারিখ। সিরাজগঞ্জে সেদিন তৎকালীন ইন্ডিয়ান অর্থাৎ বাংলাদেশি প্লেন এসে পাকিস্তানিদের ঘাটিতে বোম্বিং শুরু করে। ঠিক সেই মুহুর্তে আমরা শৈলাবাড়ি পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ করি। সে সময়ে সুলতান মাহমুদ নামে এক সহযোদ্ধাকে হারায়। সুলতান তখন বিএ পরীক্ষার্থী ছিলেন। তাকে বড়ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করতাম। যুদ্ধের ময়দানে আমি তার কথা মতো চলতাম। সকাল ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধ করি। তাই সুলতান ভাই বলল, অনেক সময় ধরে যুদ্ধ করছি, এ ফাইট দিয়ে কিছু হবে না। চলো আমরা বাঙ্কারে গ্রেনেড চার্জ করব। আমি তার কথা মেনে নিলাম।

তিনি অশ্রুভেজা দৃষ্টি লুকিয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সে অনুযায়ী অগ্রসর হই। তবে আমি একটু বেশিই এগিয়ে যাই। সুলতান ভাইয়ের কাছে একটা স্টেন গান ও রাইফেল থাকায় আমার থেকে প্রায় ৫০ গজ পেছনে পড়ে যান। এ সময় তিনি বললেন, হাসান তুই উত্তর পাশের বাংকার অ্যাটাক করবি আর আমি দক্ষিন পাশের। তখন দুজন দুদিকে যাওয়ার জন্য আমি একটি পজিশনে যায়। তাকে তাড়াতাড়ি আসার জন্য বলতেই মানকি স্টাইলে দৌড় দেন। এ সময় হাসান গুলি গুলি বলতেই একটি চাইনিজ গুলি এসে সুলতান ভাইয়ের পাঁজরে লাগে। গুলিটা মনে হলো আমার পিঠ স্পর্শ করে চলে গেল। পেছনে তাকিয়ে দেখি সুলতান ভাই শুয়ে। তখনও ভেবেছি গুলি হয়তো তার লাগেনি। কিন্তু দুই-তিন সেকেন্ড পরও তার সাড়াশব্দ না পেয়ে তাকে ডাকি। তখনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পিছিয়ে গিয়ে দেখি যেখানে পড়ে আছেন সেখনকার তিন-চার ফিট জায়গা রক্তে ভেসে গেছে। তখন সুলতান ভাইয়ের মাথায় বাঁধা পতাকাটি খুলে তার ক্ষতস্থানে বেঁধে দেই। কিন্তু সে বাঁধনে রক্ত বন্ধ হয় না। 

এ সময় দেখি আমার ওপর দিয়ে বৃষ্টির মতো ব্রাশফায়ার হচ্ছে। এমন অবস্থায় আমি শুধু আল্লাহকে বলছি, হে আল্লাহ তুমি আমার জন্য মাটি দুই ফিট নিচু করে দাও, আমাকে বাঁচাও আল্লাহ। তখন আমি মাটির সঙ্গে শুয়ে আছি। এর মধ্যে যখন গুলিবর্ষণ একটু কমে আসে তখন সুলতান ভাইয়ের নিথর দেহ পিঠে নিয়ে পূর্বের স্থানে ফিরে আসি। আসার পরেই সুলতান ভাই অসহ্য যন্ত্রণায় আমাকে বলছে, হাসান আমাকে আরেকটা গুলি কর, আমার জান তাড়াতাড়ি বের করে দে, হাসান আমাকে আরেকটা গুলি কর। 

আমি আর কান্না ধরে রাখতে পারলাম না। তিনি আবার বললেন, আমাকে একটু পানি দে। তখন পাশে একটা নালা দেখতে পাই। সেই নালায় গিয়ে কচুরিপানা সরিয়ে মাথায় থাকা পতাকা ভিজিয়ে একটু করে পানি এনে দেই। এর মধ্যেই সেখান দিয়ে মোজাম নামে আরেক মুক্তিযোদ্ধা যেতেই তাকে ডেকে নিই। তিনি এসে সুলতান ভাইয়ের নিথর দেহটা কাঁধে নিলেন। আমি তার, আমার ও সুলতান ভাইয়ের ২টাসহ চারটা অস্ত্র নিয়ে পাশের এক বাড়িতে গিয়ে গরুর দড়ি দিয়ে চাং (দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে নেওয়ার একটি বস্তু) বানিয়ে দুজনে কাঁধে করে নিয়ে ফিরছিলাম। তখন আমরা আসতেই রাস্তায় দুজন লোককে দেখতে পেয়ে তাদেরকে সুলতান ভাইয়ের নিথর দেহটি গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বলে আবার যুদ্ধের ময়দানে ফিরে আসি।

তিনি আরও বলেন, সুলতান ভাইয়ের লাশটা পাঠিয়ে দিয়ে যখন যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে আসি তখন আবার আজিজ ওস্তাদের সঙ্গে দেখা হলো।  তিনি পজিশন নিয়ে দিতে চাইলে আমি আবদার করে বললাম, ওস্তাদ আমাকে এখনই পানি দেন। তিনি আমাকে নিয়ে যেতেই দেখলাম পাকিস্তানি আর্মিদের বাঙ্কার দেখা যাচ্ছে। ওস্তাদ আমাকে বললেন, দৌড় দে। আমি দৌড় দিতেই গুলি। আমি লাফ দিয়ে পড়ে যেতেই  পিঠে ছ্যাকা দিয়ে গুলিটা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছাগলকে লাগে। তাকিয়ে দেখি গুলি লেগে ছাগলটা দুই-তিন হাত ওপরে লাফ দিয়ে উঠে মাটিতে পড়েই মারা গেল। অথচ ওই গুলিতে আমার মৃত্যু হওয়ার কথা ছিল। এটা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম, যা এ জীবনে ভুলবার নয়। পরে ওস্তাদের সঙ্গে একটি বাড়িতে এসে পানি খাওয়ার পরে আবার নতুন পজিশন দেখিয়ে দিলেন।

নতুন পজিশনে আমার কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিল। তাই সেখান থেকে সরে এসে একটি বাড়ির ঘরের পাশে রাইফেলটি রেখে হেলান দিয়ে বসতেই দেখি দুই মিনিট আগে নেওয়া পজিশনের জায়গায় বৃষ্টির মত ব্রাশফায়ার হলো ও সেখানকার ৫-৬ ফিট জায়গাজুড়ে দুই ইঞ্চি মাটি উঠে গেল। আমি বললাম, হে আল্লাহ আমি যদি ওখান থেকে না সরে আসতাম তাহলে সেখানেই আমার মৃত্যু হতো। এভাবেই অসংখ্যবার যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। যেগুলো মনে হলে আজও শরীর শিউরে ওঠে।

একদিনের ক্ষুধার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, এক সকালে গুড়ের তৈরি হালকা খাবার খেয়ে সারাদিন যুদ্ধ করে ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করছিলাম। ওস্তাদকে বললাম আমার প্রচণ্ড ক্ষুধা পেয়েছে। তখন যে বাড়িতে আমরা আছি তারা জানালো ৫-৬ জনের খাবার আছে। তখন ওস্তাদ বলল তুমি খেয়ে নাও। কিন্তু হাত-মুখ ধুয়ে এসে দেখি আমার খাবার নেই। তখন ওস্তাদ জিজ্ঞাসা করল দুইবার কে খেয়েছ? তখন জানা গেল তারই ছোটভাই দুবার খেয়েছে। তখন ওস্তাদ তার ছোটভাইকে শাস্তি হিসাবে সবার সামনে ২৫ বেত্রাঘাত করল। সেই বেত্রাঘাত দেখে ক্ষুধা হারিয়ে গেল। সেদিন না খেয়েই কাটালাম।

এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতার পাশাপাশি নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে জানিয়ে তাদেরকে খুঁজে বের করার আহ্ববান জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে বর্তমানে কিছু এমপি-মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতিতে সব অর্জন নষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যে সোনার বাংলার স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম সে সোনার বাংলা আমরা এখনো গড়তে পারিনি। তবে আমার এই জীবনে সোনার বাংলা দেখে যেতে পারব কি না সেটা নিয়েও সন্দেহ। 

সিরাজগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যাচাই-বাছাইয়ের পর জেলায় মোট ৩ হাজার ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। এরা সবাই ভাতা পেলেও এর বাইরেও আরও ভাতাভুক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। যাদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় না থাকলেও  ভাতা পাচ্ছেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় সর্বমোট ৬৬৫ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন এবং এদের মধ্যে মারা গেছেন প্রায় দেড়শো জন।

সিরাজগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী শফিকুল ইসলাম শফি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের কিছু যৌক্তিক দাবি ছিল যেগুলো আজও পূরণ হয়নি। কিন্তু তা পূরণ করাটা জরুরি। যেমন কোনো মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলে বা অসুস্থ হলে তাকে দেখতে গেলে ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে যেতে হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক প্রয়োজনে প্রতিটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে অন্তত একটি করে গাড়ি দরকার। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা মারা গেলে তাদের কবর আলাদা করার সুযোগ থাকে না বা পরবর্তী প্রজন্ম সেটা চিনতেও পারে না। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের জন্য কবরস্থানে আলদা কিছু জায়গা ও তা বাঁধিয়ে রাখার জন্য বরাদ্দ চেয়েছি। 

মুক্তিযোদ্ধা কোটার সঠিক বণ্টন হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, এর সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করণের পাশাপাশি বাইরের দেশ থেকে ৩ হাজার ৩৬ জনের যে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি করা হয়েছিল তা দ্রুত বাতিল করা উচিৎ। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জেরও ৯ জন আছে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধিসহ অনেক বিষয়ে উন্নয়ন করার জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের এই অভিভাবক। 

আরআই