অনিয়মকে প্রশ্রয় দিয়ে অন্যায়ভাবে ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২১ সালের নির্বাচন বানচালের প্রতিবাদ ও নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে গাইবান্ধার সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন, গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক ও সভাপতি মাকছুদার রহমান শাহান, সংগঠনটির সাবেক পরিচালক ও সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু, সাবেক পরিচালক নওশের আলম ও খান মো. সাইদ হোসেন জসিম। 

বক্তারা বলেন, সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে অন্যায়ভাবে ২০২১ সালের নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা নির্বাচনে নিশ্চিত হেরে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরেই এই অপকৌশল করে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট করেছে। যা তাদের নির্বাচন বানচালের অপকৌশল মাত্র।

এসময় সংগঠনটির সাবেক পরিচালক ও সভাপতি মাকছুদার রহমান শাহান তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ২৫ ডিসেম্বর শনিবার গাইবান্ধার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২১ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান চেম্বার পরিচালক রকিবুল হাসান সুমন গাইবান্ধা চেম্বারের সচিবসহ ১২ জনকে বিবাদী করে নির্বাচনি আপিল বোর্ড ও এফবিসিসিআই এর আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনালকে পাশ কাটিয়ে ভুয়া ভোটার থাকার অভিযোগ তুলে গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করে।

অথচ নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী গত ৩ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। ৪ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকার আপত্তি তোলার সময় ছিল। উক্ত সময়ে তিনি কোনো আপত্তি দাখিল করেননি। পরে ১৬ নভেম্বর চূড়ান্ত বৈধ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলে তার দুই দিন পর ১৮ ডিসেম্বর তিনি ভোটার তালিকার একটি আপত্তি পত্র চেম্বারের সচিবের কাছে দাখিল করে বিগত ৯ ডিসেম্বরের তারিখ অনুসারে আপত্তি পত্রটি গ্রহণ করার জন্য বলেন। 

সচিব তাতে রাজি না হলে বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম শান্ত সচিবকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ৯ তারিখের আপত্তি পত্রে সচিব প্রাপ্ত হয়েছে মর্মে স্বাক্ষর করে নেন। পরে ওই আপত্তি পত্র দিয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন ১১৬৯৬/২১ দাখিল করলে আদালত ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিতাদেশ দেন। 

বিষয়টি জানার পর চেম্বারের সচিব নির্বাচন ও কার্যক্রম গতিশীল রাখার স্বার্থে গত ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহরের জন্য রিট পিটিশন ৭৩১/২১ দাখিল করেন। পরে আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে যেহেতু চেম্বার অব কমার্স এফবিসিআই এর আওতাভুক্ত সেহেতু আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রকিবুল হাসান সুমনকে এফবিসিসিআই এর আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে উল্লেখিত বিষয়ে আবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন এবং আবেদন প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। 

এছাড়া তিনি আরও বলেন, তাদের প্যানেলটিকে অবৈধভাবে বিজয়ী করার জন্য সদস্য অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক সাব কমিটির আহ্বায়ক চেম্বারের সহ-সভাপতি কামাল হোসেন ও বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম শান্ত মিলিতভাবে বেশ কিছু অবৈধ ভোটার অন্তর্ভুক্ত করেন। তারপরেও তাদের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে নির্বাচন বানচাল ও তাদের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেই এ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেন তারা।

সর্বোপরি গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্সকে দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভী মুক্ত ব্যবসায়ী বান্ধব চেম্বার গঠনে সাংবাদিকের সহযোগিতা কামনা করেন সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের ব্যবসায়ীরা।

রিপন আকন্দ/এমএএস