চতুর্থ ধাপে অন্যান্য ৮৩৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মতো রোববার (২৬ ডিসেম্বর) কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার গুণবতী ইউনিয়নেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শনিবার রাতে গুণবতী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, একেবারেই জনশূন্য বাজার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রয়েছে কঠোর নজরদারি। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।

এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ছৈয়দ আহাম্মদ ভুঁইয়া খোকন এবং আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা কামাল (স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অন্যদিকে, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতেই একাধিক প্রার্থী সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য (মেম্বার) পদেও লড়ছেন প্রার্থীরা।

মূলত চেয়ারম্যান পদ নিয়েই জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না এবং হলে কোন প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হবেন, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুণবতী বাজারের একজন বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে নৌকা প্রতীকের পোস্টার ছেঁড়া হয়েছিল। এরপর আনারস প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়। এসব ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।   

তিনি আরও বলেন, দুটি ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। কাল নির্বাচনের দিন কী হয়, তা নিয়েই সবাই ভাবছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। সেজন্য অনেকে আজকে আগেভাগেই ঘরে ঢুকে গেছে। তবে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কঠোর অবস্থান রয়েছে।

স্থানীয় দশবাহা গ্রামের আরেক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না এবং নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ধরনের মারামারি বা সংঘর্ষ হবে কি না, সে প্রশ্নই এখন মানুষের মুখে-মুখে। এ নিয়েই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

আবু খালেদ নামের চাঁপাচৌ গ্রামের  বাসিন্দা বলেন, 'আমরা আগামীকালকে সুষ্ঠু ভোট প্রত্যাশা করছি।'

গুণবতীসহ চতুর্থ ধাপে সারাদেশের ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদ ও তিনটি পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ  অনুষ্ঠিত হবে রোববার। এ ধাপের ইউপি ভোট ২৩ ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও পরে ভোটগ্রহণের দিন আরও তিন দিন পিছিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।

ইসির তথ্যানুযায়ী, চতুর্থ ধাপে ইউপি ভোটে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য- এ তিন পদে মোট ৪৬ হাজার ৫৭২টি মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে মোট ৪ হাজার ৯১৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তিন হাজার ৫৪৬ জন।

সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ হাজার ৮৫০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩১ হাজার ৮০৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ৮১৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ হাজার ৫১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩০ হাজার ১০৬ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এসএইচআর/এসকেডি