শেরপুর জেলায় রেললাইন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে। জেলাকে উন্নত করতে ইতিমধ্যে অনেক পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বৈশাখী টেলিভিশনের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ কথা বলেন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ।

তিনি আরও বলেন, শেরপুর জেলাকে সব দিক দিয়ে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। শেরপুর জেলা প্রশাসনের প্রত্যেক কর্মকর্তা নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে জেলাবাসীর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আমি মাত্র ছয় মাস আগে শেরপুর জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এই অল্প সময়ে শেরপুরের অন্যতম পর্যটন স্থান গজনীতে আমূল পরিবর্তন এসেছে।

ভারত সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি করোনার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন স্থাপনা ছিল বেহাল অবস্থায়। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্য দেশের অনুকরণে তিনটি রাইড নির্মাণের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। এরই ধারাবাহিকতায় দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবল কার ও জিপ লাইনিং চালু করা হয়েছে। গজনীর লেকে কটেজ, ফিশিং ও কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে, এগুলোর প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়াতে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন মহলে ট্যুরিস্ট পুলিশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আপাতত আমরা স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছি। এগুলোর মাধ্যমে শেরপুরের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে। ফলে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেক পর্যটকদের আগমনও বাড়বে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এ ছাড়া গজনীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য একটি কালচারাল সেন্টার গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা গরিব, অসহায় ও সাংস্কৃতিমনা। যেসব আদিবাসী সংস্কৃতিকে ধারণ করে, লালন করে। তারা কালচারাল সেন্টার থেকে আয় করতে পারবে। সেই সঙ্গে ঝিনাইগাতি উপজেলার রাংটিয়া এলাকায় পর্যটকদের রাতযাপনের জন্য একটি মোটেল নির্মাণ করা হবে।

জামালপুরের বকশিগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবরদি, ঝিনাইগাতি, নাকুগাঁও সীমান্ত সড়ক দিয়ে যারা যাতায়াত করেন, তারা এই মোটেলে রাত যাপন করতে পারবেন। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। এ ছাড়া যেসব ছেলে-মেয়ে বিভিন্ন খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে শেরপুর জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেব। যেসব খেলোয়াড় জেলা শহর থেকে দূরে আসে, তাদের জন্য আমরা ২০টি বাইসাইকেলের ব্যবস্থা করব। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাদের মাধ্যমে আমরা সব দিকের, সব বিষয়ের খবর পেয়ে থাকি। তাই জেলাবাসীর সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সাংবাদিক ও জেলা প্রশাসন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।

এ সময় বক্তারা বলেন, যখন স্বাধীনতার চেতনা হারিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সে সময় বৈশাখী টিভি সম্প্রচারে আসে। পাশাপাশি স্বাধীনতার চেতনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য তুলে ধরে এই বেসরকারি টেলিভিশনটি।

শেরপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি রফিক মজিদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বৈশাখী টিভির জেলা প্রতিনিধি বিপ্লব দে কেটু। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মানিক দত্ত, সিনিয়র সাংবাদিক সুশীল মালাকার, মলয় মহন বল, মাসুদ হাসান বাদল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জাহিদুল খান সৌরভ/এনএ