অসুস্থ মনিরা বেগমের স্বামী মারা গেছেন ৩০ বছর আগে। তার একটি বিধবা ভাতার কার্ড রয়েছে। কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থার পর এ পর্যন্ত ভাতার টাকা পেয়েছেন মাত্র দুবার। তবে এবার আর ভাতার টাকা পাননি অসুস্থ এ মানুষটি। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়েও মেলেনি কোনো সমাধান।

মনিরা বেগম সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের মৃত ইসহাক মোল্লার স্ত্রী। চার মেয়ে ও এক ছেলেসন্তানের জননী মনিরা।

মনিরা বেগম জানান, স্বামী ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। অনেক কষ্টেসৃষ্টে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। তবে একটি মেয়ের পারিবারিক অশান্তির কারণে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তারপর থেকে আমার সঙ্গেই রয়েছে। ছোট ছেলে (২৪) দিনমজুরি করে। কোনোমতে খেয়ে না খেয়েই চলে সংসার। আমি নিজেও অসুস্থ। একটি বিধবা ভাতার কার্ড রয়েছে। মাসে ৫০০ টাকা করে তিন মাস পরপর ১ হাজার ৫০০ টাকা দেয়। দুই কোটা (দুবার) টাকা মোবাইলের মাধ্যমে পেয়েছি।

তিনি বলেন, ভাতাভোগীরা সবাই টাকা পেয়েছেন। কিন্তু আমার টাকাটা পাইনি। আমি অফিসে গিয়ে জানিয়েছি। এখন না দিলে কী করব?

এ বিষয়ে কলারোয়া সমাজসেবা কর্মকর্তা নূরে আলম নাহিদ বলেন, ভাতাভোগীদের মোবাইলে নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়। উপজেলায় ২৫ থেকে ২৬ হাজার ভাতাভোগী রয়েছেন। অসুস্থ মনিরা বেগম আমার অফিসে এসেছিলেন। তার কী সমস্যা সেটি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে আমার কাছে আবার এলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।

২৫ থেকে ৩০ বছর আগে মনিরার গলায় টিউমারের মতো দেখতে একটি মাংসপিণ্ড দেখা দেয়। এরপর ব্যথা অনুভব করলে গ্রাম্য চিকিৎসককে দেখায় মনিরার পরিবার। সেটি এখন ফুলে বড় হয়ে আছে।

মনিরা বেগম বলেন, স্বামী মারা গেলে এরপর আর ভালো কোনো ডাক্তারের কাছে যেতে পারিনি। ভালো ডাক্তার দেখাতে গেলে অনেক টাকা খরচ হয়। নিজেদের দিনের খাওয়া জোটে না, চিকিৎসা করাব কী দিয়ে?

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, ছবিতে দেখে মনে হচ্ছে তার ‘গয়টার’ (গলগণ্ড) রোগ হয়েছে। এটা অনেক বছর আগে থেকেই হয়েছে। অপারেশন করালে সুস্থ করা সম্ভব। সরকারি খরচে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই চিকিৎসা করা হয়।

আকরামুল ইসলাম/এনএ