মেহেদী হাসান রাব্বি। তার বাবা স্বপন একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আর মা মর্জিনা বেগম গৃহকর্মী। এই দম্পতির মেধাবী সন্তান এবার প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে কলোনির মধ্যে প্রথম জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার এ অর্জনে খুশি সবাই। তবে মেহেদীর ভর্তি আর পড়ালেখার খরচ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

জানা গেছে, শহরের কলেজ রোড পরিচ্ছন্নতাকর্মী কলোনির ঝুপড়ি এক কক্ষের ঘরে মেহেদীর চার সদস্যের পরিবারের বসবাস। ২০২১ সালে শহরের টাউন উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে। প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ অর্জন করে মেহেদী। তবে তার এই আনন্দের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

মেহেদী হাসান রাব্বি বলে, আমার এ পর্যন্ত আসার পেছনে মা ও শিক্ষকদের অনেক অবদান রয়েছে। আমার মা মানুষের বাসায় কাজ করে আমাকে পড়াশোনার খরচ দিত।  মা শুধু বলত, আমি পড়াশোনা করতে পারিনি, তুমি পড়াশোনা করিও। আজ আমি অনেক খুশি।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী কলোনির বাসিন্দা মনোয়ারা বলেন, এই প্রথম কলোনির কোনো সন্তান জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমরা অনেক খুশি। তবে তার পড়াশোনার খরচ চালাতে অনেক কষ্ট হয় তার বাবা-মায়ের।

কলোনির অপর বাসিন্দা আলেয়া বেগম বলেন, মেহেদীর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। স্কুলের শিক্ষকরা তাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। কলোনির মধ্যে প্রথম সে ভালো ফলাফল করেছে।

মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমি পড়াশোনা করি নাই। স্বপ্ন ছিল ছেলে মানুষের মতো মানুষ হবে। ছেলে আমার পড়াশোনায় ভালো। সামনের দিনে পড়াশোনা এগিয়ে নিতে সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

পটুয়াখালী টাউন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশুতোষ ভদ্র বলেন, প্রতি বছরই আমাদের বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাই অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও অধম্য মেধাবী মেহেদী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। তার মেধা রয়েছে। সরকার ও সমাজের বিত্তবানরা তার পাশে দাঁড়ালে সে অনেক দূর এড়িয়ে যেতে পারবে।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসপি