ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার কাড়ালপাড়া এলাকায় কুমার নদের আকস্মিক ভাঙনে বসতবাড়িসহ ১৩ ঘর বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার। এর মধ্যে ২৩টি পরিবার রয়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুমার নদের উত্তর দিকে ননী বিশ্বাসের বাড়ি থেকে শুরু করে দক্ষিণে শামসুল উলুম মাদরাসা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে কাড়ালপাড়া এলাকার তিন জায়গায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

ভাঙনে ওই এলাকায় মৃত খবির হাওলাদার, হোমিও চিকিৎসক নূরুল ইসলাম ও আব্দুর রাজাকের মালিকানাধীন বসতবাড়িসহ ১৩টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত খবির হাওলাদারের পুত্রবধূ সাথী আক্তার বলেন, হঠাৎ ভূমিকম্পের মতো বাড়ি নড়ে-চড়ে উঠে। পরে মচমচ শব্দ শুনতে পাই। ঘরের দরজা খুলে দেখি রান্নাঘর ভেঙে যাচ্ছে। তখন চিৎকার করে আশপাশের বাড়ির লোকদের জাগিয়ে তুলি। পরে তাদের নিয়ে ঘরের সামান্য মালামাল বের করে নিয়ে আসি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদের পাড় ধরে অসংখ্য ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অংকুর সর্দার, ওয়াহাব মিয়া, জাহিদুর রহমান, শিপন শেখ, খন্দকার হেলালসহ অন্তত ২৩টি পরিবার উচ্চ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ২৬ নভেম্বর ভোরে ফরিদপুরে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হয়। ওই ভূমিকম্পের পর থেকেই ধীরে ধীরে ফাটল দেখা যায়। তবে বাড়ি-ঘর দেবে যাওয়া শুরু হয় ২৬ ডিসেম্বর থেকে।

ফরিদপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এলাকাবসীর পক্ষ থেকে মেয়রের স্বাক্ষরসহ  এলাকার ভাঙনরোধে একটি আবেদন পানি উন্নয়ন বোর্ডে জমা দিয়েছি। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, সদরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়ে গেছে। নিচের মাটি সরে যাওয়া কিংবা ভূমিকম্পজনিত কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে।

তিনি আরও বলেন, নদের পাড় সংরক্ষণ কাজের জন্য ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা যাবে।

জহির হোসেন/এসপি