নওগাঁয় পেট্রোল দিয়ে দুর্বৃত্তদের ধরিয়ে দেওয়া আগুনে খামারে থাকা ৭টি গরুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে সদর উপজেলার দুবলহাটী ইউনিয়নের কানমটকাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) বেলা ২টার দিকে খামার মালিক ইমাম হোসেন ইমন বাদী হয়ে ৮ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৫ জনকে আসামি করে নওগাঁ সদর মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটী ইউনিয়নের কানমটকাই গ্রামের ইমাম হোসেন তিন বছর ধরে নিজ বাড়িতে খামার তৈরি করে গরু মোটাতাজা করে আসছিলেন। প্রতিদিনের মতো গরুকে সোমবার রাত ১১টার দিকে খাবার দিয়ে খামারের দরজা বন্ধ করে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরে মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে গরুর চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর দ্রুত বাইরে এলে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান বাড়ির লোকজন।

এরপর চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরই মধ্যে আগুনে ৭টি গরু ও ১০টি মুরগি পুড়ে মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন খামার মালিক ইমাম হোসেন।

অভিযুক্তরা হলেন কানমটকাই গ্রামের মৃত ওবির আলীর ছেলে মো. সালেন (৪৫) ও তার স্ত্রী নার্গিস (৪০)। মৃত সাদেক আলী মোল্লার ছেলে মোজাম মোল্লা (৫০) ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী (৪৫) এবং তাদের ছেলে মো. ফাইন (৩০)। মৃত সাকবরের ছেলে মো. তয়েন (৪৫) ও তার স্ত্রী মোছা. সহিদা (৪৫)। মো. রাজুর স্ত্রী সাথী (২৫)।

ক্ষতিগ্রস্ত খামার মালিক ইমাম হোসেন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে পেট্রল দিয়ে আমার গরুর খামারে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। অনেক কষ্ট করে গরুগুলো লালন-পালন করে স্বাবলম্বী করে তুলেছিলাম। খামারে থাকা ৭টি গরু ও ১০টি মুরগি পুড়ে মারা গেছে। গরুর খামারের মধ্যে রাখা সার, গরুর খাদ্যসহ সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যাদের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেছি, তাদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে গরু বিক্রির সাড়ে ৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেছিলাম। সে মামলা এখনো চলমান আছে। তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অনেকবার ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা তুলে না নেওয়ায় আমার গরুগুলো আগুন দিয়ে হত্যা করে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, ইমাম হোসেনের গরুর খামারে আগুন লাগার বিষয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত মালিক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. দেলোয়ার হোসেন/এনএ