নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে (নাসিক) স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার রীতিমতো চমক দেখিয়েছেন প্রচারনায়। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) নাসিকের বন্দরে তৈমূরের হাতি মার্কার প্রচারণায় কয়েক হাজার সমর্থক নিয়ে যোগ দিয়েছেন উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা।

পাশাপাশি প্রচারনায় যোগ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও বর্তমানে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম আকরাম।

এদিকে তৈমূরের প্রচারনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগ দেওয়ার বিষয়টি ‘তৈমূর ম্যাজিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। শুক্রবার দিনভর বন্দরের ২৫ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালান তৈমূর।

মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, নির্বাচন কমিশন এখনো নিরপেক্ষ হচ্ছে না। তারা নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। বন্দরে তারা আজ (শুক্রবার) বিশাল স্টেজ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জনসভা করছে। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জেও স্টেজ করে নির্বাচনী প্রচারণার সভা করেছে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। আমি নির্বাচনের মাঠে সমান সুযোগ পাচ্ছি না। আমি আজ একটা অভিযোগ দিয়েছি আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এটিএম কামালের দ্বারা। তারা রাস্তায় বড় বড় গেট করছে। আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। সকাল থেকে তারা মাইকিং শুরু করে, বড় বিলবোর্ড করছে তারা।

তৈমূর বলেন, আমি একটা বিষয় বিশ্বাস করি, ‘পাথরে লেখো নাম পাথর ক্ষয়ে যাবে, হৃদয়ে লেখো নাম সে নাম রয়ে যাবে।’ মানুষের হৃদয়ে এখন হাতি লেখা হয়ে গেছে। ঢাকা থেকে মেহমান এনে আমাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ালে আর কাজ হবে না। কারণ ২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনবার বলেছেন, তৈমূর আলম খন্দকার জেতার মতো প্রার্থী।

আমি জনগণের ইচ্ছায় প্রার্থী হয়েছি। জনগণ তাদের মনের মতো প্রার্থী পেয়েছে বলে আজ স্বেচ্ছায় ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ নেমে পড়েছে। এখানে আজ আমি গণজোয়ার দেখেছি। এই গণজোয়ার পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

নিজ দল বিএনপি থেকে অব্যাহতি প্রসেঙ্গে তৈমূর বলেন, আমার দল আমাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ভালো কাজ করেছে। সব দলের মতের মানুষের ভোট পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার শরীরটা কেটে টুকরো টুকরো করলে যে আওয়াজটা আসবে সে আওয়াজটার নাম বিএনপি। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। পানি কাটলে দুই টুকরো হবে কিন্তু তৈমূর আলম খন্দকারের সাথে বিএনপির সম্পর্ক দুই টুকরো হবে না। এখানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সব আছে। তারা যা করেছে বুঝেশুনে করেছে।

বিএনপির ভোট নৌকা মার্কায় যাবে না বরং অন্য মার্কার ভোট আমার কাছে আসবে, এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ গোটা বাংলাদেশে এখন নির্বাচন নেই। এই নির্বাচনটা হলো জনগণের সঙ্গে ১৮ বছরের ব্যর্থতার লড়াই। এই নির্বাচনটা জনগণই করবে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে শ্রমিক দিনমজুরসহ বিভিন্ন খেটে খাওয়া মানুষজন যারা আছেন, তারাই এই নির্বাচন করছেন।

স্বতন্ত্র এ প্রার্থী আরও বলেন, আমি সাড়ে পাঁচ লাখ ভোটারের সমর্থন চাই। আওয়ামী লীগ কি ভোটার না? তারা কি এ শহরের নাগরিক না? প্রার্থী হিসেবে আমি সকলের কাছেই যাব। আমি সকলের ভোট কামনা করেছি।

এ সময় তৈমূরের প্রচারনায় অংশ নেন বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, বন্দর কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির এহসান উদ্দিন আহমেদ, মুছাপুর ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির মাকসুদ হোসেন, স্বতন্ত্র নির্বাচনে জয়ী ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন।

রাজু আহমেদ/এনএ