চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। গত এক সপ্তাহে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৭১ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে ১০০-১৫০ ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই শিশু।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দুটি কক্ষ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে নেই কোনো বেড। ফলে তীব্র শীতের মধ্যেই মেঝেতেই শিশুদের থাকতে হচ্ছে। বাইরের বারান্দা ও সিঁড়িতেও রোগীদের চিকিৎসা চলছে। তিল পরিমাণ জায়গা নেই। সব মিলে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মাহমুদা খানম নামে একজন বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই। আজ দুই দিন ধরে সিঁড়ির ওপরই আমার সাত বছরের বাচ্চার চিকিৎসা চলছে। শীতে জরাজীর্ণ হতে হচ্ছে আমাদের।

বিল্লাল হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, তিন দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। গতকাল সকালে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই। এই শীতে বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরা জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, এই শীতে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মধ্যে সিংহভাগই শিশু। মূলত রোটা ভাইরাস মল ও মুখ গহ্বর দিয়ে খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে এবং একজনের কাছ থেকে অন্যজনের দেহে প্রবেশ করে। সংক্রমিত পানি, খাবার, খেলনা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র থেকেও আক্রান্ত হতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, রোটা ভাইরাসে সংক্রমণ হওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এ ভাইরাস প্রতিরোধে মায়ের দুধ কার্যকর। যেসব শিশু ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খায়, তাদের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। আর ডায়রিয়া হলে শিশুর স্বাভাবিক খাবার বন্ধ করা যাবে না। এর ফলে শিশু আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকিতে থাকে।

আফজালুল হক/এসপি