গাইবান্ধায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই দিনব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের পিঠা উৎসব। গাইবান্ধা পৌর পার্কে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে গতকাল শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত। নারী উদ্যোক্তা সংগঠন ‘উই’ ও ওম্যানস শপিং অনলাইন জোন’র যৌথ উদ্যোগে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

উদ্যোক্তারা দুই দিনে ভালো সাড়া পেয়েছেন বলে জানান। পাশাপাশি প্রতিবছর আয়োজক কমিটিকে পিঠা উৎসব আয়োজন করার দাবি জানান তারা। পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর ও পৌর প্যানেল মেয়র এ জেড এম মহিউদ্দিন রিজু। 

২২টি স্টলে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পিঠার পসরা সাজান নারী উদ্যোক্তারা। পিঠা উৎসবে তরুণ-তরুণী আর পিঠা রসিকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পিঠা উৎসবে গাইবান্ধা শহরসহ আশপাশের অনেক নারী উদ্যোক্তা স্টল দিয়ে অংশ নিয়েছেন। পিঠা উৎসবে শীতের মজাদার পিঠার মধ্যে রয়েছে ভাপা, পাটিসাপটা, নারকেলপিঠা, পাকন, পুলি, মিঠা, ক্ষীরপুলি, নারকেলপুলি, আনারকলি, দুধসাগর এবং চিতইসহ বিভিন্ন ধরনের দুই শতাধিক পিঠা।

পিঠা উৎসবে আসা মৌসুমী নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, শীতের দিনে পিঠা উৎসব ছাড়া যেন শীত মৌসুম পরিপূর্ণতা পায় না। তাই পিঠা উৎসবের খবর শুনে বন্ধুদের নিয়ে চলে এসেছি। মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছি আর মজা করে লোভনীয় সব পিঠা খাচ্ছি।

মেলায় সপরিবারে ঘুরতে এসেছিলেন শহরের পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা উল্লাস। তিনি বলেন, বাড়িতে একসাথে এত সব পিঠা তৈরির করা অসম্ভব তাই। এখানে পিঠা খেতে এসেছি। সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি হরেকরকমের বাহারি স্বাদের বিভিন্ন পিঠা।

পিঠা উৎসবে অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা বিলকিস আরা বিউটি জানান, গাইবান্ধায় এই প্রথম পিঠা উৎসবের এমন আয়োজন। এখানে পিঠা স্টল নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। যার জন্য কোনোপ্রকার এন্ট্রি ফি লাগেনি। তাই আয়োজকদের সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দুই দিনে ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেয়েছি। বিক্রিও করেছি ভালো। প্রতিবছর এ আয়োজন করা হউক।

মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তা মিনু রানী বলেন, খুব ভালো লাগছে মেলায় স্টল দিতে পেরে। প্রচুর ক্রেতাও আছে এবার মেলায়। তালবড়া, মালপোয়া গোকুলপিঠা, ডোনাট, পিজ্জা পাই, কেক, হানি চিকেন, কালাই পিঠা, দুধপুলি, চিকেনবানসহ প্রায় ১৬ রকমের পিঠা এবার আমার স্টলে নিয়ে এসেছি।

পিঠা উৎসবের আয়োজক কমিটির সদস্য শাহনাজ রহমান রত্না বলেন, নারীরা এখন পিছিয়ে নয়, নারীরাও আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে, সকল নারী স্বাবলম্বী হোক, নিজের পরিচয়ে পরিচিত হোক এটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের এই ক্ষুদ্র আয়োজন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের শুভেচ্ছা জানান।

গাইবান্ধার পৌরসভার প্যানেল মেয়র এ জেড এম মহিউদ্দিন রিজু বলেন, বিভিন্ন রকম নতুন পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে ভালো লাগছে। নিয়মিত এমন মেলা হলে গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্ম পরিচিত হতে পারবে। আশির দশকে নিয়মিত পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হতো কিন্তু বর্তমানে তা আর হয় না। আমি চাই এ পিঠা উৎসবের মাধ্যমে পুরাতন ঐহিত্য ফিরিয়ে আসুক।

রিপন আকন্দ/এমএসআর