স্মৃতি ধরে রাখতে নিজের অর্থে বানানো ইউপি কার্যালয়ের ব্যবহৃত কাঠের তৈরি চেয়ার বাড়িতে নিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের পরাজিত এক চেয়ারম্যান প্রার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম নায়েব আলী শেখ। তার বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলা শহরের বালিয়াকান্দি গ্রামের ওয়াপদা এলাকায়। তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপত পদেও আছেন। এর আগে গত নির্বাচনে বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর বিশ্বাসের কাছে পরাজিত হয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান হওয়ার পর বসার জন্য একটি বিশেষ চেয়ার তৈরি করেছিলেন নায়েব আলী শেখ। দায়িত্ব গ্রহণের দিন তিনি ইউনিয়ন পরিষদে এক পীর সাহেব নিয়ে এসে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। দোয়া মাহফিল শেষে ওই বিশেষ চেয়ারে পীর সাহেবকে বসিয়ে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। এবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। হেরে যাওয়ার পর সেই চেয়ারটি তিনি বাড়িতে নিয়ে যান।

চেয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পরাজিত চেয়ারম্যান নায়েব আলী শেখ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গতবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ অর্থে চেয়ারটি তৈরি করেছিলাম। দায়িত্বভার গ্রহণের দিন ওই চেয়ারে আমি এক পীর সাহেবকে বসিয়ে চেয়ারটি উদ্বোধন করেছিলাম। এই স্মৃতি ধরে রাখতে আমি চেয়ারটি বাড়িতে নিয়ে আসি।

তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের টাকায় যেসব চেয়ার তৈরি করা হয়েছিল তা তালিকায় লিপিবদ্ধ করা আছে। খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রোকনুজ্জামান বলেন, নায়েব আলী শেখ যখন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন আমি এই ইউনিয়নে ছিলাম না। গত ৩ জানুয়ারি তিনি গ্রাম্য পুলিশের মাধ্যমে চেয়ারটি বাড়িতে নিয়ে গেছেন। লোকমুখে শুনেছি চেয়ারটি তিনি নিজ অর্থে বানিয়েছিলেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর বিশ্বাস বলেন, ‘বিগত চেয়ারম্যান আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। আমি শপথ পাঠের পর বাড়ি থেকে চেয়ার নিয়ে এসেছি। ওই চেয়ারটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে করা হয়েছিল।

বালিয়াকান্দি উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান বলেন, সরকারিভাবে ক্রয় করা আসবাবপত্রের তালিকা লিপিবদ্ধ করা থাকে। সরকারি চেয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে তৈরি করে তবে তা বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু ওই চেয়ারটি সরকারিভাবে ক্রয় করা কিনা তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, বালিয়াকান্দি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলমগীর বিশ্বাসের বাবা বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। তার মা বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মীর সামসুজ্জামান/এসপি