গাছের সঙ্গে পোস্ট অফিসের সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে। তবে হদিস নেই কোনো অফিস কক্ষের। রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় কমবেশি সবারই চোখে পড়ে এটি। কৌতূহলবশত কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করেন, অফিসটি কোথায়? এমন প্রশ্নে স্থানীয়দের সাফ জবাব, গাছের মাথায়।

এমনই অবস্থা মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হাজরাতলা পোস্ট অফিসের। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবেই চলছে সরকারি একটি অফিসের কার্যক্রম।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতীতে হাজরাতলা মঠ ও মিশনের জায়গায় একটি টিনশেড ঘরে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলত। কিন্তু ঘরটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন পোস্ট অফিসের নিজস্ব কোনো অফিস বা ঘর নেই। তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত পোস্ট মাস্টারের ঘরের বারান্দায় চলে সব কার্যক্রম।

জানতে চাইলে হাজরাতলা পোস্ট অফিসের মাস্টার নীলিমা বিশ্বাস বলেন, হাজরাতলা মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ পোস্ট অফিস করার জন্য তিন শতক জায়গা দিয়েছেন। সেখানেই পোস্ট অফিস নির্মাণ করা হবে। কিন্তু আজও সেটা নির্মাণ করা হয়নি। বর্তমানে কোনো অফিস না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে আমার ঘরের বারান্দায় সব কার্যক্রম চলছে।

তিনি আরও বলেন, এখানে যাদের সঞ্চয়পত্র ছিল, তারা সেটি স্থানান্তর করে মাগুরা সদরে নিয়ে গেছেন। তাই বর্তমানে চিঠি আদান প্রদান এবং কিছু মানি অর্ডার ছাড়া আর তেমন কোনো কাজ নেই। মাখনলাল নামে একজন পিয়ন আছেন যিনি চিঠি বিতরণ করেন।পাশাপাশি জেলা সদর থেকে ডাক নিয়ে আসেন।

হাজরাতলা গ্রামের বাসিন্দা রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের এলাকায় পোস্ট অফিসের কোনো নিজস্ব ভবন না থাকায় সঞ্চয়পত্রের লভাংশ তোলা বা নতুন করে সঞ্চয়পত্র খোলার বিষয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। কষ্ট করে মাগুরা জেলা শহরে যেতে হয়। অফিস হলে এলাকার মানুষের কষ্ট কমবে।

স্থানীয় গোবিন্দপুর গ্রামের হারান আলী বলেন, আমরা গাছের সঙ্গে ঝোলানো পোস্ট বক্সে চিঠি ফেলে আসি। অনেক সময় সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করি। কিন্তু বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চিঠিপত্র দেওয়া-নেওয়া করতে হয়।

হাজরাতলা পোস্ট অফিসের মাস্টার নীলিমা বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, চলতি বছরেই পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তারা আশা করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তেমনটি জানিয়েছেন। এটা হলে এলাকার মানুষের উপকার হবে।

মাগুরা জেলা পোস্ট মাস্টার রবিউল ইসলাম বলেন, এটি দেখাশুনার দায়িত্ব রয়েছে জেলা পোস্ট অফিস পরিদর্শকের ওপর। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

মাগুরা জেলা পোস্ট অফিস পরিদর্শক আছিয়া খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে পোস্ট অফিসের নিজস্ব কোনো অফিস না থাকায় পোস্ট মাস্টারের ঘরের বারান্দাতেই সব কার্যক্রম চলছে। ঠিক কবে পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ করা হবে সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

একেএম/এসপি