পাবনার বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল হক বাবুসহ নৌকা প্রতীকের বিরোধিতাকারী দলীয় নেতাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী আনোয়ারা সুলতানা।

রোববার (৯ জানুযারি) দুপুরে উপজেলার কাশীনাথপুরে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। 

আনোয়ারা সুলতানা জানান, গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি বেড়া উপজেলার জাতসাখিনী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। শুরু থেকেই বিশ্বাসঘাতক খন্দকার মোস্তাকদের দোসর আওয়ামী লীগের নামধারী বেড়া উপজেলার উপ-নির্বাচনের চেয়ারম্যান ও জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল হক বাবু এবং তার ভাই মুকুসহ দোসররা এই ইউনিয়নসহ বেড়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। যারা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে তাদের সম্পর্কে এবং প্রতীক সম্পর্কে বিভিন্ন সময় অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন। একপর্যায়ে নৌকা প্রতীককে হারাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তার ভাই মুকুসহ অন্যদের দিয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট কেটে নৌকার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেন। 

তিনি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, পৌর মেয়রসহ আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা ভোটে বিজয়ের পরিবেশ তৈরি করলেও আওয়ামী লীগের নামে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন সেই কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, আব্দুর রশিদ, রেজাউল হক বাবু গংরা আমিসহ বেড়ার ছয়টি ইউনিয়নে নৌকাকে পরাজিত করেছে। তারা বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে টাকা খেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি কাজ করেন। যার ফলশ্রুতিতে আমি সামান্য ভোটে পরাজিত হই।

আনোয়ারা সুলতানা বলেন, আমি একজন নারী। দেশের নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন। নৌকা মহান স্বাধীনতার প্রতীক। নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক। নৌকা প্রতীককে সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে নৌকা প্রতীকের মানসম্মান ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। দিনরাত পরিশ্রম করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে প্রচার করেছি। অথচ বিশ্বাসঘাতক আওয়ামী লীগের নামধারী বেড়া উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল হক বাবু এবং তার ভাই মুকু ও দোসররা এই ইউনিয়নে নৌকা ডুবিয়ে দেন। এখন তারা বিভিন্ন স্থানে দাম্ভিকতা নিয়ে বলে বেড়ান ‘বেড়ায় আমরা সব, এখানে শেখ হাসিনা বা নৌকা কিছু না। আমরা যার পক্ষ নিব তাকে যেভাবেই হোক নির্বাচিত করব। আমরা তা প্রমাণ করেছি।’ 

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেওয়া কামরুজ্জামান উজ্জল বলেন, এসব অভিযোগ তার (আনোয়ারা) মনগড়া। কারণ নির্বাচনের সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। ভোট কেমন হয়েছে, কীভাবে হয়েছে সাংবাদিকরাও জানেন। সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, ভোটের মাধ্যমেই যারা জয়ী হওয়ার তারাই নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে অন্য কাউকে দোষী করে লাভ নেই। 

বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু বলেন, নির্বাচনের সময় আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ছিলাম। যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয়। বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। আমার ধারণা একটি চক্র ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের বিরুদ্ধে তাকে (আনোয়ারা) ব্যবহার করছে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর