২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। বিধ্বস্ত হয়ে যায় উপকূলীয় এ জেলার বিভিন্ন জনপদ। ঝড়ের প্রভাবে সড়কে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। দ্রুত সড়ক থেকে গাছ অপসারণ করতে কাজ শুরু করেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

তবে আজও সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা-তালা সড়কের কুমিরা বাজার মোড় এলাকায় একটি গাছের গুঁড়ি অপসারণ করা হয়নি। সড়কের অর্ধেক অংশ জুড়ে পড়ে রয়েছে গাছের এ গুঁড়িটি। আম্ফানের দীর্ঘ ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও সড়কে পড়ে থাকা গাছটি অপসারণ না করায় দুর্ভোগে পড়েছে লাখো মানুষ।

ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে চলাচলকারীরা গাছের গুঁড়িটির পাশে প্ল্যাকার্ড বসিয়ে দিয়েছেন। সেখানে লিখেছেন, ‘যেহেতু গাছটি সরানো খুব কঠিন তাই রাস্তা ঘুরিয়ে দিন জনদুর্ভোগ দূর করুন। জনস্বার্থে, সড়ক ব্যবহারকারী জনগণ।’

সুজনশাহ গ্রামের ভ্যানচালক আবুল কালাম জানান, সড়কের অর্ধেক অংশ জুড়ে হেলে পড়ে রয়েছে গাছের গুঁড়িটি। এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দেড় বছর পার হলেও গাছটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতিবাদ হিসেবে প্ল্যাকার্ডটি বসিয়ে দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত গাছের অংশটি সরানোর উদ্যোগ নেয়। যদি না পারে তবে রাস্তাটি যেন ঘুরিয়ে তৈরি করে দেয়। 

স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল বিশ্বাস বলেন, বৃহৎ এই শিশুগাছটি ঝড়ের রাতে উপড়ে পড়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর সড়কের ওপারে পানের বরজের মালিক গাছটির কিছু অংশ কেটে ফেলে তার পানের বরজটি রক্ষা করেন। পরবর্তীতে সরকারের লোকজন এসে গাছের কাটা অংশগুলো নিয়ে যান। তারপর থেকেই গাছের গুঁড়িটি পড়ে রয়েছে। এতে মানুষদের খুব সমস্যা হচ্ছে।

এই সড়ক ব্যবহারকারী ট্রাক ও ইজিবাইক চালকরা জানান, গাছটি সড়কের অর্ধেক অংশ জুড়ে পড়ে থাকায় গাড়ি ক্রসিংয়ের সময় দুর্ঘটনা ঘটে, যানজট লেগে যায়। এমনিতে সড়কটি ছোট তার মধ্যে অর্ধেক অংশই দখল করে পড়ে আছে গাছটি। 

পাটকেলঘাটা এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম রাজু বলেন, সাতক্ষীরা জেলা সদরের সঙ্গে তালা উপজেলা সদরের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই সড়কটি। ট্রাক, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ প্রতিদিনি লাখো মানুষ চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। সড়কে পড়ে থাকা গাছটির কারণে একদিকে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, অন্যদিকে দুর্ঘটনাও ঘটছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ গাছের গুঁড়িটি সরিয়ে নিচ্ছে না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

গাছের গুঁড়িটি অপসারণের বিষয়ে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, সড়কে মরা গাছ বা হেলে পড়া গাছ অপসারণের জন্য আমাদের আরবরি নামে একটি ইউনিট রয়েছে। তাদের গাছটি অপসারণের জন্য বলা হয়েছে। আশা করি দ্রুত তারা ব্যবস্থা নেবেন।

আকরামুল ইসলাম/আরএআর