অটো এসএমএস পদ্ধতিতে পাথর আমদানির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। 

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রাকের ওজন মাপার দাবিতে এ রুট দিয়ে আমদানি বন্ধ রেখেছে তারা। এতে দৈনিক ৫০ লাখ টাকা হিসেবে গত ৫ দিনে প্রায় কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ ট্রাক পাথর আমদানি হতো, কিন্তু গত ৫ দিন থেকে এই বন্দরে কোনো পাথর আসছে না। আমদানি বন্ধ থাকায় এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।

তামাবিল কয়লা-পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তামাবিল স্থলবন্দরের বাংলাদেশ-ভারত দুই পাশে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ফিতা দিয়ে মেপে পাথর আমদানি করা হতো। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ স্থল বন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালু করা হয়। এতে প্রতিটি গাড়ি স্কেলে ওঠার পর ব্যাংকের নামসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু লিখে দিতে হবে। এরপর অটো এসএমএস আমদানিকারকের মোবাইলে পৌঁছার পর গাড়ি নামানো হবে। এতে প্রতিটি গাড়ি ওজন করতে সময় লাগবে ৭-৮ মিনিট। ফলে নির্ধারিত সময়ে ২০০ এর বেশি গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। এতে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বে।

ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রফতানি করে থাকেন ফিতা দিয়ে মেপে। ফিতা দিয়ে মাপা বোল্ডার পাথরের সঙ্গে থাকা পানি ও মাটি ওজনে তারতম্য হয়। ফলে ভারত থেকে ওজন করে ম্যানুয়াল পদ্ধতির কাগজ নিয়ে এসে বাংলাদেশ বন্দরে বেকায়দায় পড়তে হবে আমদানিকারকদের। সব তথ্য নতুন করে দেওয়ার সঙ্গে ওজনের তারতম্যের জন্য গুণতে হবে জরিমানা। ওজনে কম হলেও দিতে হবে নির্ধারিত ওজনের টাকা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারতে স্থলবন্দরে চলমান নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দুই দেশের স্থলবন্দরের সমন্বয় হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ বন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি বন্ধ রাখতে হবে।

তামাবিল কয়লা-পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. লিয়াকত আলী বলেন, স্থলবন্দর ডিজিটালাইজেশনের পক্ষে আমরা, তবে সেটা ভারত-বাংলাদেশ উভয়েরই হতে হবে। একপাশে ম্যানুয়াল অন্য পাশে ডিজিটাল পদ্ধতি থাকলে কোনো সময়ই মাপ সমান হবে না। এখানে দুই দেশের ব্যবসা চলছে। তাই এক দেশে ডিজিটাল এবং অন্য দেশে ম্যানুয়াল পদ্ধতি হলে পাথর আমদানিতে সমস্যা হবে। এ ছাড়া আলাদা পদ্ধতির কারণে লোকসানে আছি। তাছাড়া আমার মাথার ওপর মানি-লন্ডারিং আইন ঝুলছে। 
 
তিনি আরও বলেন, যেহেতু ভারতের স্থলবন্দর ডিজিটালাইজেশনের ৭৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত প্রায় সেহেতু কিছুদিন অপেক্ষা করে তামাবিল স্থলবন্দরে অটোমেশিনপদ্ধতি চালুর দাবি জানাই। দুইদেশে একসঙ্গে এ পদ্ধতি চালুতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

তামাবিল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মো. মাহফুজুল ইসলাম ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, তামাবিল স্থলবন্দরে গত ৭ জানুয়ারি থেকে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এতদিন শুধু ওজন মাপার স্কেল চালু ছিল। এখন ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে অটো এসএমএস পদ্ধতি চালু হয়েছে। এতে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো আরও ত্বরান্বিত হবে।

আরআই