উচ্চ আদালতের আদেশে এলএইচ ব্রিকস গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন

বিদ্যালয়ের কোল ঘেঁষে ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটাটির স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ছাড়া ইটভাটার সঙ্গে থাকা টিনশেড পাকা ঘর উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। উচ্চ আদালতের আদেশে এলএইচ ব্রিকস নামের ইটভাটাটির স্থাপনা ভেঙে দিয়ে নিলাম করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহম্মেদ, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সামিউল আহম্মেদ কুরসি, পরিবেশ অধিদপ্তরের জুনিয়র কেমিস্ট রফিকুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সমন্বয়ে একটি অভিযানিক দল এই রায় কার্যকর করে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহম্মেদ বলেন, বিদ্যালয়ের কোল ঘেঁষে ফসলি জমিতে ইটভাটা তৈরি করার কারণে চককবীর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ সুলতান আহম্মেদ বাদী হয়ে ভাটাটি বন্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। পরে আদালত সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ করার আদেশ দেন। সেই আদেশ মঙ্গলবার কার্যকর করা হলো।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে লোকমান হাকিম নামের এক ব্যক্তি ফুলবাড়ি উপজেলার চককবীর গ্রামের আবাদি জমির কোল ঘেঁষে ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন, চককবীর মৌজায় তিন একর ফসলি জমির ওপর এলএইচ ব্রিকস নামে এই ইটভাটাটি নির্মাণ করেন।

ফসলহানিসহ গ্রামবাসী ও স্কুলগামী শিশুদের স্বাস্থ্যহানি ঘটার আশঙ্কায় ওই গ্রামবাসীর পক্ষে চককবীর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ সুলতান আহম্মেদ বাদী হয়ে ভাটাটি বন্ধ করার জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। বিচারপতি তারিকু উল করিম ও বিচারপতি  ইকবাল কবির শুনানি শেষে গত বছরের ২৭ আগস্ট এলএইচ ব্রিকস নামে ইটভাটাটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন।

দিনাজপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সামিউল আহম্মেদ কুরসি বলেন, আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে অবৈধ্য ইটভাটাটির স্থাপনা উচ্ছেদ ও উন্মুক্ত নিলাম দেওয়া হয়। ইটভাটার সঙ্গে থাকা টিনশেড পাকা ঘর উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে আদালতের রায় কার্যকর করা হয়।

সামিউল আহম্মেদ বলেন, এ ইটভাটাটি বাস্তবায়ন করা হলে গ্রামবাসীসহ এই গ্রামের শিশুদের স্বাস্থ্যহানি ঘটত এবং তিন ফসলি জমির চাষাবাদে ব্যাঘাত ঘটত। আদালতে ন্যায়বিচার পেয়ে তিনিসহ গ্রামবাসীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

রিট পিটিশনকারী সৈয়দ সুলতান আহম্মেদ বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে এলাকাবাসীর মনের চাওয়া পূরণ হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা হওয়ার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অনেকটা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেলেন। তিনি বলেন, সরকারের কাছে আশা রাখব সারা দেশেরই যেন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোল ঘেঁষে ইটভাটা তৈরি না হয়।

জানতে চাইলে ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিয়াজ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলায় মোট ইটভাটা রয়েছে ৩১টি। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে জিকজাগ ভাটা। সব ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে।

মো. মাহাবুর রহমান/এনএ