কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে পরিবেশবান্ধব কাঠের জিপ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মো. এনামুল হক বুলবুল ও ইমরানুল হক দুই ভাই। গাড়িটি তৈরি করতে তাদের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

এর আগে বুলবুল সোলার প্যানেল দিয়ে মোটরবাইক, মিনিবাস তৈরি করে সাড়া ফেলেছিলেন। এবার তিনি তৈরি করলেন সৌরবিদ্যুৎচালিত চার চাকার কাঠের জিপ।

জানা গেছে, বুলবুল তার ছোট ভাই ইমরানুল হককে নিয়ে পরিবেশ ও যাত্রীবান্ধব এবং স্বল্পব্যয়ের কাঠের কাঠামোর জিপ তৈরি করেছেন। এজন্য তারা যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে চারজন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি জিপ স্বল্প পরিসরে চলাচল শুরু করেছে।

চার চাকার এ যানটি সৌরবিদ্যুতের প্যানেল দ্বারা চলবে। রয়েছে চার্জের ব্যবস্থাও। একবার চার্জে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম এটি। যা ঘণ্টায় গতি ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। এটি তৈরিতে ৪৮ ভোল্টের একটি ব্যাটারি, ১২০০ ওয়াটের একটি মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। যানটিতে আসন রয়েছে চারটি। এটি তৈরিতে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লেগেছে। সময় লেগেছে দুই থেকে তিন মাস।

এর আগে এনামুল হক বুলবুল সোলার প্যানেল দিয়ে মোটরবাইক, মিনিবাস তৈরি করে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা তরুণ উদ্ভাবকের পুরস্কার লাভ করেন।

কলেজছাত্রী লায়লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাঠের তৈরি এ গাড়িটি একটি পরিবেশবান্ধব গাড়ি। এ গাড়িটিতে দুর্গন্ধ নেই। ধোঁয়া না থাকায় অনেক আরামদায়ক। আমাদের মতো যাত্রীদের জন্য ভাড়া কম হওয়ায় গাড়িটি অনেক ভালো।

তরুণ উদ্ভাবক এনামুল হক বুলবুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু করার আগ্রহ ছিল। এর আগে সোলার দিয়ে মোটরবাইক, মিনিবাস তৈরি করেছি। বেশ সাড়া পেয়েছি। নতুন কিছু করার আগ্রহ নিয়ে পরিবেশবান্ধব চার চাকার জিপটি তৈরি করেছি। 

তিনি বলেন, এখন সময় প্রযুুক্তির। ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার ধীরে ধীরে বাড়ছে। পরিবেশ ও জ্বালানি খরচের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কাঠ ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুতের চার চাকার জিপ তৈরি করা হয়েছে। এতে জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। চার চাকার এ যানটি সৌরবিদ্যুতের প্যানেল দ্বারা চলবে। রয়েছে বিদ্যুত দিয়ে চার্জের ব্যবস্থাও। একবার চার্জে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারবে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুল আজিজ আকন্দ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই ভাই যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। সরকার যে ঋণ দেয় তা দিয়ে তাদের এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে ঋণের স্কেল যদি আরেকটু বাড়ানো যায় তাহলে তারা ভালো কিছু করতে পারবে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই ভাই কাঠের জিপ তৈরি করে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন। তিনি তাদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসের পাশাপাশি কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দুজনকে ক্রেস্ট দিয়েছেন। 

এসপি