সুন্দরবন ভ্রমণে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‌'ওমিক্রন' এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবন ভ্রমণে নৌযান চলাচলে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) খুলনা নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কাযালয় থেকে তাকে ওই নির্দেশনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারই আলোকে তিনি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা কাযকর থাকবে।  

এর আগে বুধবার সুন্দরবন ভ্রমণে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনকে।

এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় খুলনা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ, শিক্ষা সফর, বনভোজন, নৌ-ভ্রমণ ও নৌ-বিহারে ট্যুরিস্টবাহী নৌযান ও লঞ্চগুলো চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

এদিকে ট্যুর অপারেটররা বলছেন, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোথাও কোনো কিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাত্রী সীমিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেদিকে লক্ষ্য না করে সরাসরি সুন্দরবনে যাওয়া ট্যুরিস্ট নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এমন পরিস্থিতে কী করবেন তাও বুঝে ওঠতে পারছেন না। বছরের মাত্র পাঁচ মাস সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারেন পর্যটকরা। এখন চলছে সেই মৌসুম। এ সময় এমন নিষেধাজ্ঞা দিলে পথে বসবে ট্যুরিস্ট অপারেটররা। সারা বছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হয় তাদের।  

সুন্দরবনে ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ট্যুরিস্ট অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিড বলেন, সুন্দরবনে নৌযান চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে বুধবার একটি চিঠি ইস্যু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। চিঠিটি আজ আমরা পেয়েছি। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত আমাদের অবাক করেছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত সব ট্যুর অপারেটরদের নৌ-যান বুকিং দেওয়া আছে। অনেকেই অগ্রিম টাকা নিয়ে খরচও করে ফেলেছেন। এমন পরিস্থিতে ওই নিষেধাজ্ঞা ট্যুর অপারেটরদের বিপাকে ফেলবে। ওই নিষেধাজ্ঞার পর শুক্রবার যেসব নৌ-যানের সুন্দরবনে ট্যুর নিয়ে যাওয়ার কথা তারা এখন মহাচিন্তায়। এমন পরিস্থিতে কী করবেন তা কেউ বুঝে ওঠতে পারছেন না। এ ব্যাপারে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কাযালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে এবং নিষেধাজ্ঞা বাতিলের জন্য বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আমাদের মৌখিকভাবে চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন। রোববার হয়তো লিখিত চিঠি আমরা পেয়ে যাব। 


মোহাম্মদ মিলন/এমএএস