বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে উপজেলার মুক্ষাইট এবং গোটাপাড়া ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডের সদস্য আসলাম কাজী টুটুল, গোটাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সমশের আলীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

আহতদের মধ্যে ১১ জন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুলের দোকান ও উভয় পক্ষের অন্তত ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

আহতরা হলেন, সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হাওলাদার (৫৮), মুক্ষাইটের ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুলের বাবা গোটাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোসলেম কাজী (৫৫), আসলামের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (২৫), সানি মোড়ল (২১), রফিকুল ইসলাম (৫০), মঞ্জুর করিম (৭০), কোড়ামারার জাহাঙ্গীর (৩২), মো. মুসা খান (৩৫), কহিনুর বেগম (৪০), চিরুলিয়া এলাকার হাফিজুল শেখ (৩৫), গোটাপাড়ার রবিউল করিম (৩৮), এবং সাজোখালী এলাকার স্বপন বিশ্বাস (২৩)। অন্য আহতদের নাম ঠিকানা এখনো পাওয়া যায়নি।

ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুল বলেন, আমার বাড়ি মুক্ষাইট। গতকাল নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করি। হঠাৎ গ্রাম থেকে ফোনে জানানো হয়, আমাদের দোকান আক্রমন করা হবে। ফোন পেয়ে গ্রামে পৌঁছানোর আগেই ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সমশের আলী, পরাজিত সদস্য প্রার্থী গফফার ও তার লোকজন আমাদের দোকান পাট ভাঙচুর করে। এ ছাড়া আমার বাবাসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে। বাবার পকেটে থাকা দোকানের ক্যাশের প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে মুক্ষাইটে পৌঁছানোর পরে রাতে আবারও আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।

তবে টুটুলের অভিযোগ অস্বীকার করে গোটাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সমশের আলী বলেন, মিছিল শেষ করে আমরা শুনতে পারি মুকুলের স্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে। তাকে দেখতে নেতাকর্মীদের নিয়ে কোড়ামারা এলাকায় যাই। সেখান থেকে ফিরে মুক্ষাইট মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে বসলে, নব্য আওয়ামী লীগ জামায়াত-বিএনপির সাবেক ক্যাডাররা হামলা করে। তারা আমার পালসারসহ ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। জীবন বাঁচাতে দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করি। তারপরও হামলাকারীরা সাটারের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

নব্য আওয়ামী লীগ কারা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, তারা সবাই স্থানীয় মুক্ষাইটের বাসিন্দা এবং বিএনপি-জামাতের লোক।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের বিষয়ে কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ছাড়া ফের সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়ছে।

তানজীম আহমেদ/আরআই