যে বয়সে শিশুদের বাড়ি অথবা বিদ্যালয়ের আঙিনায় পড়াশোনা ও খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা, সে বয়সে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার আঁখি আক্তারের (১২) জীবন কাটছে অমানবিকভাবে। বিনা চিকিৎসায় আট বছর ধরে শিকলে বাঁধা রয়েছে সে। মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে সে।

আঁখি ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ডেফলাই গ্রামের আদর আলীর মেয়ে। তার বাবা একজন দরিদ্র রিকশাচালক। আদর আলীর ৩ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে আখি সবার বড়।

এ বিষয়ে আদর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, জন্মের চার বছর পর্যন্ত আঁখি সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। এরপর হঠাৎ সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অর্থ-সংকটের কারণে আঁখির চিকিৎসা করাতে পারিনি আমরা। আঁখির আচরণ সমাজের আরও অন্য ছেলে-মেয়েদের মতো না। তাই তাকে শিকলে বন্দি করে রাখতে হয়েছে।

আদর আলী আরও বলেন, রিকশা চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খাই। মেয়ের চিকিৎসার জন্য টাকা এত টাকা পাব কোথায়?

নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মজনু মিয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটিকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে তার পরিবার। আঁখিকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পরিষদে কোনো ত্রাণসামগ্রী এলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, হতদরিদ্র ওই পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত আবেদন করলে চিকিৎসা সহায়তার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জাহিদুল খান সৌরভ/এনএ