দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে মাঘের হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে নারী ভোটারের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।

জানা গেছে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩৪টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ চলবে। ৩ নং ওয়ার্ডের কয়েকটি কেন্দ্রে সকাল থেকেই ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। নারী-পুরুষ সবাই মিলে কাকডাকা ভোরে এসেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়া মাড়িয়ে সাত সকালে কেন্দ্রে হাজির নারী ভোটাররাও। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন তারা।

এম এ রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দিতে এসেছেন হালিমা আরা। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইভিএমে ভোট হইবো। জীবনে প্রথম ইভিএমে ভোট দিমু। তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে আসছি। তাড়াতাড়ি ভোট দিলে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাইতে পারুম।

জানা গেছে, নোয়াখালী পৌরসভার মোট ভোটার ৭৫ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৪০১ ও নারী ভোটার ৩৮ হাজার ৩২৫ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, ৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন,  নোয়াখালী পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে এবারই প্রথম ভোটগ্রহণ চলছে। এখন পর্যন্ত সহিংসতার কোনো আশঙ্কা দেখছি না।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছি। তাই প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ধরা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ৭৫০ জন পুলিশ, ৪৫০ জন আনসার, ৩ প্লাটুন বিজিবি, ৩ প্লাটুন র‍্যাব, পুলিশের চারটি মোবাইল টিম, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু এবং সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে কোনো প্রকার অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। যে কেন্দ্রে গোলযোগ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হবে তাৎক্ষণিক সেই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

প্রসঙ্গত, পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল। এছাড়া বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরন কম্পিউটার (স্বতন্ত্র), শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছসহ ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

হাসিব আল আমিন/এসপি