রংপুর বিভাগে এক দিনের ব্যবধানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশে। এই সময়ে কোনো রোগী মারা যায়নি। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ (ইয়েলো জোন) এই অঞ্চলে দিন দিন করোনার সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ২ জন করে, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩, গাইবান্ধার ৪, দিনাজপুরের ১৪ এবং রংপুরের ২২ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। বিভাগে আরও ১ জন সুস্থ হয়েছেন।

একই সময়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন ২৪ জন।

এর আগের দিন আট জেলায় ২৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ওই দিন ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

পরিচালক (স্বাস্থ্য) আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৪ হাজার ৯৯১ এবং ৩৩২ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬৪৯- তে।

এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮৯৪ জন। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৭ হাজার ৭১৬, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৪৭১, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৮৩৮, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৬৫৫ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৭৭৯ জন।

তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১০ হাজার ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৯৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫২ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৩০৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। তবে বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক।

একই সঙ্গে শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সঙ্গে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই