মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয়ে জন্ম নেওয়া মাগুরার সেই শিশু সুরাইয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) ভর্তি করা হয়েছে। তিন ধরনের থেরাপির মাধ্যমে গতকাল সোমবার থেকে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআরপির শিশু বিভাগের ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপিস্ট মো. নাজমুল হাসান। এর আগে সকাল ১১টার দিকে সাভারে সিআরপিতে ভর্তি করানো হয় শিশু সুরাইয়াকে।

সিআরপির দেওয়া তথ্যমতে, একটি প্যাকেজের আওতায় দুই সপ্তাহ বা ১৪ দিন এই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে সুরাইয়াকে। সুরাইয়াকে ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি ও স্পিচ ল্যাংগুয়েজ থেরাপি দেওয়া হবে। সঙ্গে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে পরিবারকে দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ডিভাইজ। তখন বাড়িতেই ফিজিওথেরাপি দিতে পারবে পরিবার।

শিশু বিভাগের ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপিস্ট নাজমুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সেই সুরাইয়াকে সিআরপিতে ভর্তি করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে সুরাইকে সিআরপি বিভাগ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এ সময় তার পরিবারকে ফিজিওথেরাপি দেয়ার পদ্ধতি ও এর খুঁটিনাটি শিখিয়ে দেওয়া হবে। যাতে বাড়িতে তারাই এই থেরাপি দিতে পারেন। এজন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইসও সরবরাহ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, তবে প্রতি মাসে একবার হলেও ফলোআপ করতে হবে। অর্থাৎ মাগুরা কাছাকাছি পাবনায় সিআরপির সাব সেন্টার অথবা সাভারে ফলোআপ দেখাতে পারবেন। জন্মের পর থেকে সুরাইয়ার নানান শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। সে এখন দাঁড়াতে পারে না। ডান পা ও ডান চোখে সমস্যা একটু বেশি। তবে মাগুরার প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন সেবাকেন্দ্রে ফিজিওরথেরাপি নিলেও তার সম্বলিত চিকিৎসা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থকের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন এক পক্ষের নেতা কামরুল ভূইয়ার ভাবি অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম। পরদিন গুলির ক্ষত নিয়েই জন্ম হয় সুরাইয়ার। এ ঘটনায় একজন নিহত হওয়ারও ঘটনা ঘটে।

মাহিদুল মাহিদ/এমএসআর