মাদারীপুরে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে এক হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস। একই সঙ্গে প্রত্যেককে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন তিনি।

সোমবার বিকেল তিনটার দিকে বিজ্ঞ আদালত এ রায় প্রদান করেন। এ সময় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তরা হলেন, আমগ্রাম এলাকার অশোক বৈদ্য, নরেন বৈরাগী, কালু বিশ্বাস, বিজয় বেপারী ও তরণী বৈদ্য। তবে বিজয় বেপারী পলাতক রয়েছেন। 
 
মামলার এজাহার সূত্রে যায়, জেলার রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম এলাকার মৃত চৈতন্য বৈদ্যর ছেলে অশোক বৈদ্য, তরণী বৈদ্য, গৌরঙ্গ বৈদ্যর সঙ্গে একই এলাকার গুরুপদ বৈদ্যের ছেলে বিষ্ণু পদ বৈদ্যের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। 

২০০২ সালের ১৪ অক্টোবর পূজার অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে গুরুপদ বৈদ্যর স্ত্রী ও বিষ্ণু পদ বৈদ্যের মা রাধা রানী বৈদ্যকে অপহরণ করে নিয়ে যায় একই এলাকার চৈতন বৈদ্যর ছেলে অশোক বৈদ্য, তরণী বৈদ্য, গৌরঙ্গ বৈদ্য, পদ বিশ্বাসের ছেলে কালু বিশ্বাস ও নরেন বৈরাগী ও বিজয় বেপারী। 

এ ঘটনায় অপহরণের পরের দিন রাজৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে বিষ্ণু পদ বৈদ্য। মামলা দায়েরের ১০ দিন পর পুলিশ পার্শ্ববর্তী পাখুল্লার বিলের মধ্যে কচুরিপানার নিচ থেকে নিহত রাধা রানী বৈদ্যের দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোখলেসুর রহমান ঘটনার তদন্ত শেষে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৩ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন গৌরঙ্গ বৈদ্য মারা যায়। দীর্ঘদিন সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত রায় প্রদান করেন। 

মাদারীপুর জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং ঢাকা পোস্টকে বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমগ্রাম এলাকার গুরুপদ বৈদ্যের স্ত্রী রাধা রানী বৈদ্যকে পাখুল্লার বিলে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখে আসামিরা। হত্যাকাণ্ডের ১১ দিন পর ওই বিল থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিহতের লাশ উদ্ধার করে। 

আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় বিজ্ঞ আদালতে ১১ জন সাক্ষী উপস্থাপন করি। অবশেষে বিজ্ঞ অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রায় প্রদান করেন। এ রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। 

নাজমুল মোড়ল/এমএএস