গোয়াল থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া গরু উদ্ধারের জন্য চোরদের পেছনে পেছনে ধাওয়া করেছিলেন গরুর মালিক সাজ্জাদ হোসেন। চোররা প্রথমে ছুরিকাঘাতে এবং পরে ট্রাকচাপা দিয়ে প্রাণে মেরে চলে যায়। পরে পুলিশ সেই চুরি যাওয়া দুটি গরু উদ্ধার করে নিহত সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী মিতু বেগমের হাতে তুলে দিয়েছে।

এ সময় ডুকরে কেঁদে ওঠেন নিহত সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী মিতু বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে মাগুরা সদর থানা চত্বরে পুলিশ চুরি হয়ে যাওয়া গরু দুটি নিহত সাজ্জাদ হোসেনের বিধবা স্ত্রী মিতু বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এই আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

মিতু বেগম আরও বলেন, যে গরু দুটির জন্য আমার স্বামীর প্রাণ দিতে হয়েছিল, আজ সেই গরু দুটি হাতে পেয়েছি। কিন্তু স্বামীকে তো আর কোনো দিন ফিরে পাব না। তাই আমি চাই তাদের যেন ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) কামরুল হাসান মাগুরা সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত বছরের ৭ নভেম্বর মধ্যরাতে চুরি হয়ে যাওয়া গরু উদ্ধারের জন্য পুকুরিয়া গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন মোটরসাইকেল নিয়ে চোরদের ট্রাকের পিছু নেন। মাগুরা সদর উপজেলার আসবা গ্রামের মধ্যে গরু ভর্তি ট্রাক থামাতে গেলে চোরেরা তাকে প্রথমে ছুরিকাঘাত ও পরে ট্রাকচাপায় হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ৮ নভেম্বর সাজ্জাদের স্ত্রী মিতু বেগম শালিখা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দীর্ঘ তদন্তে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১২ সদস্যের সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সন্ধান পায়। অবশেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও সদর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে এ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া তাদের স্বীকারোক্তিতে মাগুরা জেলায় বিভিন্ন সময় চুরি হওয়া ১১টি গরু উদ্ধারসহ চোরাই কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।

মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মামুন হোসেন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, চুরি যাওয়া দুটি গরু উদ্ধার করে আজ বিকেলে নিহত সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী মিতু বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের নামে মাগুরা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ চোর চক্রের বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

অপূর্ব মিত্র/এনএ