সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে ইতোমধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

গত ২৩ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নির্বাচনী এলাকায় পোস্টার টানানো, বিতরণসহ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন একরামুল হক চৌধুরী তাওহীদ। তার প্রতীক মোটরসাইকেল। তাওহীদের স্ত্রী মোছা. নিলুফা আক্তার লিপি পেয়েছেন রজনীগন্ধা প্রতীক। তবে তিনি এখনো নিজের প্রচারণায় নামেননি। তার স্বামী ভোটের মাঠে প্রচারণা চালালেও ঘরবন্দি রয়েছেন লিপি। সরেজমিনে তাওহীদের পোস্টার ছাড়া তার স্ত্রীর কোনো পোস্টার দেখা যায়নি।

আওলাই ইউনিয়নের ভোটার শামছুদ্দিন বলেন, এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সাতজন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীও আছেন। স্বামী প্রচারণা চালালেও স্ত্রীকে এখনো প্রচারণায় দেখা যায়নি। এখন যাকে ভালো লাগবে তাকেই ভোট দেব।

কল্পনা আক্তার নামে এক ভোটার বলেন, শুনেছি সাতজন চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়েছে। এখনো সবার ছবি দেখিনি। স্বামী-স্ত্রীও দাঁড়িয়েছে। স্বামীর ছবি দেখলেও স্ত্রীর দেখা যায়নি। ভোটের দিন ঠিক করব যে কাকে ভোট দেব।

মুগুরচণ্ডীপুর গ্রামের মামুন প্রধান বলেন, এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী একজন দাঁড়িয়েন। তার স্ত্রীও দাঁড়িয়েছেন। আমরা এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে আছি। আমরা কাকে ভোট দেব? 

ধলটিকর গ্রামের বাসিন্দা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী তাওহীদের চাচা সুজাউল ইসলাম বলেন, আমার ভাতিজা ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়েছে। ভাতিজা প্রচারণা শুরু করেছে তবে তার স্ত্রী এখনো প্রচারণা শুরু করেনি। সে বাড়িতেই আছে। আমরা এই নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হোক এটাই চাই।

একরামুল হক চৌধুরী তাওহীদ

চেয়ারম্যান প্রার্থী একরামুল হক চৌধুরী তাওহীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি আওলাই ইউপি নির্বাচনে ভোটাররা যেন কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এজন্য আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। 

একই পদে স্বামী-স্ত্রীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। 

এ বিষয়ে কথা বলতে বাসায় গেলে তাওহীদের স্ত্রী নিলুফা আক্তার লিপি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সপ্তম ধাপে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচবিবির কুসুম্বা ও আওলাই এই দুই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কুসুম্বা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর আওলাই ইউনিয়নে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীও লড়ছেন একই পদে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

আওলাই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত এস এম ইব্রাহিম হোসাইন (নৌকা প্রতীক), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী একরামুল হক চৌধুরী তাওহীদ (মোটরসাইকেল প্রতীক), তার স্ত্রী মোছা. নিলুফা আক্তার লিপি (রজনীগন্ধা প্রতীক), বর্তমান চেয়ারম্যান  আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল (ঘোড়া প্রতীক), ওবায়দুর রহমান আলম (চশমা প্রতীক), সোহেল ফকির (টেলিফোন প্রতীক) এবং আজিজুল হক ঠান্ডা (আনারস প্রতীক)। এই ইউনিয়নে মোট ২৪ হাজার ৬৫৫ জন ভোটার রয়েছেন।

অন্যদিকে কুসুম্বা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত জিহাদ মন্ডল (নৌকা প্রতীক) এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তার হোসেন মন্ডল (আনারস প্রতীক)। এই ইউনিয়নে ভোটার রয়েছেন ২৩ হাজার ৫৭৪ জন।

চম্পক কুমার/আরএআর