নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় পুলিশের দুই উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত হওয়ার ঘটনায় পলাতক আসামি আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাবাদের জন্য রিমান্ডে এনেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) আসামি আলমগীর হোসেনকে চট্টগ্রামের লোহাগড়া থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম।

এর আগে গত ২০ জানুয়ারি সেই আসামি পালানোর ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে। আরও দুই সদস্য হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার খ-জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহরিয়ার হাসান, নারায়ণগঞ্জ ডিএসবি শাখার ডিআইও-২ মো. হুমায়ুন কবির খান।

কমিটিকে সাত কার্যদিবসে অনুসন্ধান করে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের কাছে দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৭ জানুয়ারি সোমবার গোপন সূত্রে খবর ছিল টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবার একটি চালান আসছে, খবর পেয়ে সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোলপ্লাজায় তল্লাশিচৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় গাড়িটিকে সিগন্যাল দিলে এক কনস্টেবলকে আহত করে দ্রুত সেটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের আরেকটি টিম মোগড়াপাড়া এলাকায় ধাওয়া করে গাড়িচালক আলমগীর হোসেনকে গাড়ি ও ৪২ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেফতার করে।

পরে তাকে নিয়ে সরাসরি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে চলে যায় পুলিশ। এ সময় আলমগীরই গাড়ি চালান। এসপি অফিসে সংবাদ সম্মেলনের পর সোনারগাঁ থানায় রওনা দেন দুই এসআই ও এক এএসআই। তবে তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারতেন না। ফলে আলমগীরকে দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। পথে সোনারগাঁয়ের দত্তপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পৌঁছালে গাড়ি থেকে কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়ি খাদে ফেলে দেন আলমগীর।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই এসআইকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া এএসআই আহত হয়েছেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত দুই এসআই কাজী সালেহ আহম্মেদ ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে এবং এস এম শরীফুল ইসলাম গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। তারা সোনারগাঁ থানায় কর্তরত ছিলেন।

শেখ-ফরিদ/এনএ