মাত্র তিন কিলোমিটার সড়ক। সামান্য বৃষ্টি হলে সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ। এসবে পানি জমে তৈরি হয় কাদা। তখন রাস্তায় হেঁটে চলাচল করা হয়ে পড়ে এক সাগর পাড়ি দেওয়া। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এমন অবস্থা হয়েছে সড়কটির। বরগুনা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের উপজেলা বাজার থেকে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ পর্যন্ত অবস্থিত এটি।

সরেজমিনে জানা যায়, তিন কিলোমিটার ওই সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হয় ২০০২ সালে। ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও আর সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ। একটু বৃষ্টি হলেই জমে কাদা ও পানি। এ রাস্তাটি তখন পায়ে হেঁটে চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ তিন গ্রামের হাজার মানুষ শহরে যাতায়াত করে। সড়কের এই বেহালের কারণে তাদের পণ্য পরিবহন, গ্রামের প্রসূতি ও বিভিন্ন রোগী দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিপাকে পড়তে হয় প্রতিনিয়ত। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ কমবে বলে জানান তারা।

স্থানীয় অটোরিকশাচালক আবু সাঈদ বলেন, আমি কামরাবাদ থেকে বরগুনা রুটে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। দুই-তিন মাস আগে লোন নিয়ে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে এই অটোরিকশাটি কিনেছি। কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় রাতে গাড়িটি বাড়িতে নিয়ে রাখতে পারি না। ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা বাজারে রেখে যেতে হয়। ভাগ্য খারাপ থাকলে সহজেই চুরি হয়ে যেতে পারে গাড়িটি।

স্থানীয় ছগির মৃধা বলেন, ২০ বছর সিসি ঢালাইয়ের রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। এরপর একবারের জন্যও রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি। গত বছর আমার গর্ভবতী স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স খবর দিই। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারেনি। তাই পাশের খাল দিয়ে নৌকায় করে তাকে বাজার পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।

বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য কাশেম হাওলাদার বলেন, এ এলাকায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আছে, যারা বরগুনার বিভিন্ন কলেজে লেখাপড়া করে। কিন্তু রাস্তার অবস্থা বেহাল হওয়ায় তিন কিলোমিটার হেঁটে তারপর উপজেলা থেকে গাড়িতে করে কলেজে যায় তারা। বর্ষাকালে সৃষ্টি হয় আরও দুর্দশা। চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহুবার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।

এ বিষয়ে বুড়িচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগ থেকেই রাস্তাটি পাশ করানোর জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি। রাস্তাটি নিয়ে জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়েছে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের আরও কয়েকটি রাস্তা রয়েছে। এসব সড়ক মেরামতের জন্য ‘বরগুনা প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে সড়কগুলো মেরামত করা হবে।

এনএ