প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গুম, পুলিশের হাতে উদ্ধার
প্রায় তিন বছর আগে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপহরণ নাটক সাজিয়ে নিখোঁজ হন অটোচালক শাজাহান ইসলাম নাহিদ। এরপর গুম করে তাকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ তোলেন তার পরিবার। সেই অটোচালক অবশেষে নাহিদকে জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে লালমনিরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) মধ্যরাতে শহরের মিশন মোড় এলাকা থেকে নাহিদকে আটক করে পুলিশ। আজ দুপুরে আটক ব্যক্তিকে আদালতে পাঠায় লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।
আটক শাহজাহান আলী নাহিদ কালীগঞ্জ উপজেলা কাকিনা ইউনিয়নের ইশোরকোল গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। বর্তমানে লালমনিরহাট শহরের হাড়িভাঙ্গা মাজার এলাকার বাসিন্দা।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধে মামলা হয় শাহজাহান আলীর নাহিদের বিরুদ্ধে। সেই জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আত্মগোপন হন তিনি। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল শাহজাহান আলীর স্ত্রী মতিয়া বেগম দিপা বাদী হয়ে স্বামী নিখোঁজের বিষয়ে সদর থানায় একটি জিডি (৪১৪) করেন। এরপর ওই সালের ২৫ এপ্রিল তার বাড়ির পাশে নিখোঁজ শাহজাহান আলীর রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে মতিয়া বেগম দিপা এলাকায় প্রচার করেন, তার স্বামীকে প্রতিপক্ষ হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে। যা নিয়ে তৎকালীন কিছু গণমাধ্যমে খরব প্রকাশিত হয়।
শাহজাহান আলী নাহিদ হত্যা হতে পারেন, এমন ক্লু নিয়ে তদন্তে মাঠে নামে সদর থানা পুলিশ। হত্যার বিষয়টি পুলিশের কাছে রস্যজনক মনে হলে জিডি নথিভুক্ত রেখে তদন্ত চলমান রাখে পুলিশ।
অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দিনগত মধ্যরাতে প্রায় তিন বছর পর লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকা থেকে নিখোঁজ শাহজাহান আলী নাহিদকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের শাহজাহান আলী নাহিদ পুলিশকে জানায়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই নিজে অপহরণের নাটক করেন। নিখোঁজ জিডির বাদী নিজেও জানতেন তার স্বামীর সন্ধান।
লালমনিরহাট সদর থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শাহজাহান আলী নাহিদ নিজে আত্মগোপনে ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানি করার দায়ে আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এনএ