ভাষার মাসেই পরপারে চলে গেলেন ভাষাসৈনিক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসেম। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান।

গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করে জানান, সাবেক এমপি আবুল হাসেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিক বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে মারা যান তিনি। 

১৯৩০ সালে ১৭ আগস্ট ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মরহুম আকতার হোসেন ও মরহুমা নূরুন নাহার দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন আবুল হাসেম। জন্মের দুই বছরের মাথায় তিনি মাতৃহারা হয়েছিলেন।

আবুল হাসেম ১৯৫০ সালে গফরগাঁও সরকারি কলেজের ছাত্রসংসদের প্রথম ভিপি ছিলেন। ছয় দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন আবুল হাসেম।

১৯৭০ সালের তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ময়মনসিংহ-১৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধাদের কারাগারে বন্দী করা হয়। দুই বছর কারাগারে কাটিয়ে এমপি হাসেম ১৯৭৭ সালে কারাগার থেকে মুক্ত হন। ২০০৫ সালে 'যখন এমপি ছিলাম' নামে একটি বইও লেখেন তিনি।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও গুণী এ মানুষের মৃত্যুতে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

উবায়দুল হক/এনএ