গত দুই দিনের বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বরগুনার শুঁটকি উৎপাদনকারীরা। এতে জেলার দুই উপজেলায় প্রায় ৭-১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বরগুনার পাথরঘাটা ও তালতলীর শুঁটকি পল্লীগুলো ঘুরে দেখা যায়, সাগর থেকে ধরে আনা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে এনে বড় বড় স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এসব মাছ শুঁটকি তৈরির জন্য রোদে শুকাতে দেওয়া হচ্ছে। তবে দুই দিনের হঠাৎ বৃষ্টিতে এসব কাঁচা মাছ ভিজে গেছে। আকাশে মেঘ ও কুয়াশা থাকায় কড়া রোদের দেখা মিলছে না উপকূলে। ফলে অধিকাংশ কাঁচা মাছই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হবে ব্যবসায়ীদের। এ লোকসান কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা চান পাথরঘাটা ও তালতলীর শুঁটকি পল্লীর জেলেরা।

পাথরঘাটা শুঁটকি পল্লীর ফারুক, অমল, রফেজসহ কয়েকজন বলেন, এবার সাগরে মাছের দাম চড়া। তার উপরে আবার মাঘ মাসে বৃষ্টি। বৃষ্টিতে কাঁচা মাছে পচন ধরেছে। এসব মাছ শুকানোর মতো পর্যাপ্ত রোদও পাচ্ছি না। অকালে বৃষ্টি আর মেঘলা আবহাওয়ায় আমাদের ৯-১০ লাখ টাকার লোকসান হবে। লোকসান কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা আশা করছি আমরা।

তালতলীর শুঁটকি পল্লীর বিপ্লব, রাজু, হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, বিকেলে শুঁটকি তুমার (স্তূপ) করে রেখেছিলাম আমরা। এক রাতের বৃষ্টিতে অর্ধেক মাছ পচে গেছে। ইতোমধ্যে ৫-৬ লাখ টাকার মাছ ফেলে দিতে হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। সরকার আমাদের আর্থিক সহযোগিতা অথবা বিনা  সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করলে লোকসান কাটিয়ে ফের ব্যবসা চালু করা যাবে।

তালতলীর শুঁটকি আড়তদার হেলালউদ্দীন ফকির বলেন, আমার আড়তে পাথরঘাটা ও তালতলীর ৬০ জনের মতো শুঁটকি উৎপাদনকারী রয়েছে। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে তাদের মাছ নষ্ট হয়ে গেছে। দুই উপজেলা মিলেয়ে ৮-১০ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছি আমরা।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, শুঁটকি বৃষ্টির পানিতে ভিজলে এর গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। বাজারে এর চাহিদা থাকে না। রোদ থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমত। মাঠ পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত শুঁটকি উৎপাদনকারীদের তালিকা করা হবে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে যাদের মাছ নষ্ট হয়ে গেছে তাদের তালিকা তৈরি করবে উপজেলা প্রশাসন। তারপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।

এসপি