পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য ববিতা খাতুন। জীবন-জীবিকার তাগিদে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি মাটি কেটে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু ইউপি সদস্য হয়ে মাটি কাটার কাজ করবেন বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি চেয়ারম্যান। নির্দেশ দেন মাটি কাটার কাজ বন্ধ রাখতে। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই নারী সদস্য। কিস্তির টাকা দিতে না পেরে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। 

জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ববিতা বলেন, আপনাদের তো আগেই বলেছি আমার সংসার চলে কীভাবে। যার স্বামী থেকেও নেই, সংসারে আয়ের মানুষ নেই, তার মতো দুঃখী আর কে হতে পারে? আমি মেম্বার হয়েছি। মানুষ মনে করে কত টাকা রোজগার করছি। মানুষও আমার থেকে অনেক কিছু আশা করে। কিন্তু মানুষ বোঝে না আমার সংসার চলে কীভাবে? আমি তো এখনও পরিষদের কোনো ভাতা/বেতন পাইনি। সরকারি কোনো কাজও করতে পারছি না। আমার দীর্ঘ দিনের আয়ের পথটাও এখন বন্ধ।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়েও আমি মাটি কাটার কাজ করছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে গত কয়েক দিন আগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আমার জায়গা নেই, ঘরের অবস্থাও শোচনীয়। এখন এনজিওর কিস্তিও দিতে পারছি না, সবমিলে এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছি।

চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, ববিতা খাতুন একজন কর্মঠ, জীবন সংগ্রামী মানুষ। সে আগে কী কাজ করেছে সেটা আমার বিবেচ্য বিষয় নয়। এখন সে একজন জনপ্রতিনিধি। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে মাটি কাটবে, শ্রমিকের কাজ করবে বিষয়টি দৃষ্টিকটু লাগে। তাই তাকে এই কাজ করতে নিষেধ করেছি। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া আমি ইউএনও স্যারের সঙ্গে ববিতার বিষয়ে কথা বলেছি। তিনিও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ‘মাটি কেটে সংসারের চাকা ঘুরছে ইউপি সদস্য ববিতার’ শিরোনামে ঢাকাপোস্ট.কমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর উপজেলাজুড়ে ইউপি সদস্য ববিতাকে নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়। আর এরপরই ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল তাকে কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন।

রাকিব হাসনাত/এসপি