হাফেজ তারাজুল ইসলাম জন্ম থেকেই অন্ধ। বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার কুর্শা বলরামপু গ্রামে। এলাকায় তিনি অন্ধ হাফেজ হিসেবেও পরিচত। বসতভিটা ছাড়া তেমন কোনো আবাদি জমি নেই। ঘরে আছে স্ত্রী ও তিন ছেলে-মেয়ে। 

সরকারের দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা ও মানুষের সাহায্যে চলে সংসার। এরই মাঝে অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

বড় মেয়ে তহুরা এবার স্থানীয় স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেছে। তহুরার স্বপ্ন সে পড়াশুনা করে বড় হয়ে বাবার সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু টাকার অভাবে তাহাজুল তার মেয়েকে কলেজে ভর্তি করাতে পারেননি। 

অসহায় তহুরার স্বপ্নপূরণে এবার তার পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রংপুর জেলা পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর জেলা অফিসার্স মেসে তহুরার কলেজে ভর্তিসহ বই কেনা ও পড়াশুনার খরচের জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছে পুনাক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির সহধর্মিণী মধুছন্দা ভট্টাচার্য, রংপুর জেলা পুনাক সভানেত্রী সোনিয়া আকতার, সহসভানেত্রী লোটাস রায়, মাহমুদা হোসেন, ডা. আশেকা আকতার প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে মধুছন্দা ভট্টাচার্য বলেন, রংপুরে পুনাক প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। পুনাকের এমন মানবিক কার্যক্রম সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। 

পুনাকের রংপুর সভানেত্রী সোনিয়া আকতার বলেন, পুনাকের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী জীশান মীর্জার দিক নির্দেশনায় রংপুরে আমরা বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। ইতোমধ্যে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এদিকে পুনাকের সহযোগিতায় আবারও লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে তহুরা আনন্দে কেঁদে ফেলেন। তহুরার বাবা অন্ধ হাফেজ তাহাজুল বলেন, টাকার অভাবে মোর বেটির পড়াশুনা বন্ধ হয়া গেছিল। পুনাকের সাহায্যে এবার মোর বেটির পড়াশুনা চালাইম। এ সময় তহুরা উচ্চশিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোসহ অন্ধ বাবার সংসারে আলো ফোটানোর অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও এস্টেট) আনোয়ার হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ ও সি সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ প্রমুখ।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি