গোলাপ ছাড়া ভালোবাসা প্রকাশের কথা চিন্তায় করা যায় না। তাইতো বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস ঘিরে সাভারে একটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সরবরাহ ও ফলন কম হওয়ায় গোলাপ এমন দামে বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।

সোমবার সকালে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে পাড়া-মহল্লা কিংবা মহাসড়কের পাশে ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুলের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতার চাপ নেই। তবে বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাসমাগম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে সাভারের বাড়ইপাড়া এলাকায় ফুল নিয়ে বসেছেন মাহবুব নামে মৌসুমি ফুল ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ঈদ, ভালোবাসা দিবসসহ বিশেষ দিনগুলোতে ফুল কিনে বিক্রি করি। আগে প্রতি পিস গোলাপ কিনতাম ৩ থেকে ৫ টাকার মধ্যে। এবার সেই গোলাপ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কিনে এনেছি। বিক্রি করছি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গোলাপের দাম বেশি হওয়ায় এবার তেমন ক্রেতাও নেই। দিন শেষে ফুল যদি থেকে যায় তাহলে লোকসানে বিক্রি করতে হবে।

সাভারের ফুল বিক্রেতা আলম বলেন, আমাদের সাভারেই প্রচুর গোলাপ চাষ হয়। কিন্তু এবার গোলাপের বাগানে ফুল নেই। রোগে পচন ধরে ফুল নষ্ট হয়েছে। ফুলের তেমন আমদানিও নেই। বাগানেই পাইকাররা ফুল কিনছেন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আমাদের গোলাপ কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। বিক্রি তো ১০০ টাকার নিচে করলে লোকসান হবে। কারণ সব ফুল তো বিক্রি হবে না। অবিক্রিত ফুল নষ্ট হয়ে যাবে। 

পাইকারি ফুল ক্রেতা আউয়াল বলেন, আমরা বাগানে বাগানে ঘুরে অল্প সংখ্যক ফুল পেয়েছি। গোলাপ কিনতে হয়েছে প্রতিযোগিতা করে। প্রতিটি গোলাপ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। আসলে ফুলের ফলন খুব একটা হয়নি। আমরা প্রতি বছর যে বাগান থেকে ১০-১২ হাজার ফুল কিনতাম এবার সেই বাগান থেকে মাত্র ২৫০ পিস কিনলাম।

ফুল ক্রেতা জোবায়ের আল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি গোলাপের দাম চাচ্ছে ১২০ টাকা। সর্বশেষ ১০০ টাকা করে দুটি গোলাপ কিনলাম। ১০ টাকার গোলাপ কিভাবে ১০০ টাকা বিক্রি হয়? আমি গোলাপ কিনতে এসে রীতিমতো অবাক হয়েছি। তবে দরকার হওয়ায় ১০০ টাকায় কিনলাম। সাধারণ মানুষ এই দামে গোলাপ কিনতে পারবে না। ৫০-৬০ টাকার মধ্যে হলেও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকত।

আরেক ক্রেতা আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আমি গার্মেন্টসে কাজ করি। আমার স্ত্রীর জন্য গোলাপ কিনতে এসেছিলাম। ১০টি গোলাপের টাকা দিয়ে ১টি গোলাপ কিনলাম। স্ত্রীকে ভালোবাসা জানাতে গোলাপ ফুল কিনতে এসেও বিড়ম্বনায় পড়েছি। গোলাপ কেনার পরে আর ফিরে যাওয়ার রিকশা ভাড়া নেই। এখন হেঁটে হেঁটে ফিরছি। এমন দামে কেউ ফুল কিনবে বলে মনে হয় না।

সচেতন নাগরিক কমিটির আশুলিয়া অঞ্চলের সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম বলেন, ফুলের দাম খুব বেশি নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো দিবসে ফুলের এমন দাম হলে প্লাস্টিক বা আর্টিফিশিয়াল ফুলের দিকে ঝুঁকবে ক্রেতারা। তাই ফুলের বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান তিনি।

এসপি