যশোরের চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদ থেকে মেশিনের মাধ্যমে বালু তুলে বিক্রি করছে অসাধু চক্র। মৌখিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলেও তোয়াক্কা করছে না চক্রটি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদপাড়ের স্থাপনা ও কৃষি জমি।

জানা গেছে, চৌগাছার হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুরে ভৈরব নদ থেকে কপোতাক্ষ নদের উৎপত্তি। এরপর নারায়ণপুর ও পাতিবিলা ইউনিয়ন, চৌগাছা পৌরসভা হয়ে স্বরূপদাহ, চৌগাছা সদর, ধুলিয়ানী ও পাশাপোল ইউনিয়ন হয়ে ঝিকরগাছা ও কেশবপুর উপজেলা হয়ে বয়ে গেছে এই নদ। বলা চলে উপজেলাকে দ্বিখন্ডিত করেছে কপোতাক্ষ। 

নদের পশ্চিমে রয়েছে উপজেলার বৃহৎ তিন ইউনিয়ন নারায়ণপুর, স্বরূপদহ এবং সুখপুকুরিয়া। কপোতাক্ষ নদের উৎপত্তিস্থল হাকিমপুরের তাহেরপুরে পানিগ্রাম রিসোর্টের দক্ষিণ পাশে ও পানিগ্রাম রিসোর্টের মধ্যে তাহেরপুর শ্মশানঘাটের পাশে ১০-১২টি মেশিন বসিয়ে বালু তুলে স্তূপ করে রেখেছে অসাধু চক্র। পাশে আরও কয়েকটি স্থানে মেশিন বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে ওই স্থান থেকে বালু তুলতে নিষেধ করার পর এক দিন বালু তোলা বন্ধ ছিল। এরপর ফের তারা বালু তোলা শুরু করেছে।

এদিকে গত ২ ফেব্রুয়ারি চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দিঘলসিংহা গ্রামের ইউপি সদস্য বায়েজিদ হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে ওই ব্যক্তিদের বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তবে ওই স্থানে বন্ধ হলেও তাহেরপুর গ্রামের দুই-তিন স্থানে প্রায় ১২টি মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে তারা। একইসঙ্গে পেটভরা গ্রামে কয়েকটি মেশিন বসিয়ে উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে।

চৌগাছা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, একটি পক্ষ পৌরসভার শ্মশানঘাট এলাকায় কপোতাক্ষ নদে মেশিন বসিয়ে বালু তুলছিল। খবর পেয়ে আমি তাদের কঠোরভাবে নিষেধ করেছি। পরে সেখান থেকে বালু তোলা বন্ধ হয়েছে। এভাবে নদ থেকে বালু তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ।

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা জানিয়েছেন, প্রথমে এক স্থান থেকে বালু তোলার সময় চৌগাছা সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তাদের নিষেধ করা হয়। পরে অন্যস্থানে বালু তোলা শুরু করলে মোবাইলে তাদের নিষেধ করেছি। তারা কথা দিয়েছিলেন আর বালু তুলবেন না। 

তিনি আরও জানান, চৌগাছায় স্বীকৃত কোনো বালুমহাল নেই। এসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহিদ হাসান/এসপি