কুড়িগ্রামে স্কুলপড়ুয়া কিশোরদের জোটবদ্ধ করে তাদের দিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জেলার চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা গ্রামের মো. দুলাল মিয়া। 

দুলাল মিয়ার অভিযোগ- চিলমারী উপজেলার মুদাফৎ থানা এস সি উচ্চ বিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক ও উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশিদ কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান। তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো, জিম্মি করা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গেও জড়িত তিনি। তার ভয়ে এলাকার মানুষ কোনো কথা বলতে পারে না। 

লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, আমি নির্যাতনের শিকার হয়েছি। গত ১ নভেম্বর হারুনুর রশিদ তার গ্যাং দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করেন। চাঁদা না পেয়ে ও ছেলেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য করতে না পেরে রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মেরে আমার ডান হাত ভেঙে দেন। আমার স্ত্রী আছিয়া বেগম ও ছেলে জিহাদ হোসেনকে মেরে রক্তাক্ত করেন। হাসপাতালেও ঠিক মতো চিকিৎসা নিতে দেননি। টানা ২২ দিন অসহনীয় ব্যথা নিয়ে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের বিছানায় ছিলাম। প্রথম দিকে থানায় মামলা নিতে না চাইলেও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় চিলমারী থানায় মামলা করি। 

তিনি আরও বলেন, মামলা হওয়ার পর গত ১৪ নভেম্বর হারুনসহ অন্যান্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আমাকে মারার উদ্দেশ্যে একাধিকবার আমার বাসায় আসেন। আমাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ ছাড়া ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। সেই থেকে আমি গা ঢাকা দিয়ে আছি। 

ভুক্তভোগী দুলাল মিয়ার দাবি, এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত হারুন। আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি হওয়ার পর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নেওয়া, ভূমিহীনদের সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করা, বিচারের নামে ঘুষ নেওয়া, মামলার বাদী-বিবাদীর পক্ষ নিয়ে টাকা খাওয়া, মাসের পর মাস স্কুলে না গিয়ে অপকর্ম করাই তার কাজ। 

সংবাদ সম্মেলন শেষে দুলাল মিয়া নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দাবি করেন। পাশাপাশি আসামিদের জামিন বাতিল করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হারুনুর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মো. জুয়েল রানা/আরআই/আরএআর