সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বাজারে কমেছে ক্রেতার সংখ্যা। গত সাত দিনে প্রায় সব ধরনের মাছ-মাংসের দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার। বেড়েছে চাল-ডালের দামও। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে তেলের দাম।

শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর সূত্রাপুরের মাছ-মাংস-কাঁচাবাজার বাজার ঘুরে দেখা যায়, মুরগি ও হাঁসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা। খাসির মাংস প্রতিকেজি ৯০০ টাকা ও মাথা আকারভেদে পিস প্রতি ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস হাড়সহ প্রতিকেজি ৫৬০ টাকা ও হাড় ছাড়া ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি মুরগি ১৭০ টাকা। দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগি প্রতিকেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দাম বেড়েছে ২০ টাকা। ময়মনসিংহ ও বরিশাল থেকে আসা প্রতি জোড়া হাঁস ১২০০ টাকা ও প্রতি পিস ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার। প্রতি পিস ফুলকপি ২০ টাকা, পাতাকপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলু প্রতিকেজি ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, শিম ৩০-৫০ টাকা, মূলা ১৫-২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, ধনিয়া পাতা ৩০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। প্রতি পিস ব্রকলি ২৫ টাকা, প্রতিকেজি শসা ৪০ টাকা, ক্ষিরা ৩০ টাকা ও গাজর ৩০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, শিমের বিচি ৮০ টাকা ও করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুদিনা পাতা প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি আঁটি পালংশাক ১০ টাকা, ডাটা শাক ৩০ টাকা, লালশাক ১০ টাকা ও কলমিশাক ১০ টাকা। প্রতি কেজি পুঁইশাক ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ও খুচরায় বেড়েছে চালের দাম। প্রতিকেজি স্বর্ণা চাল ৪৬-৪৮ টাকা, পাইজম চাল ৪৮-৫০ টাকা, আটাশ ৫২-৫৪ টাকা (ভালোমানের), নিম্নমানের মিনিকেট চাল ৬০-৬২ টাকা, ভালোমানের মিনিকেট চাল ৬৪-৬৮ টাকা, বাঁশমতি চাল ৭০-৭২ টাকা (বাংলা), রইকো বাঁশমতি চাল ৩২০ টাকা (ভারত), নিম্নমানের নাজির চাল ৫৮-৬০ টাকা, পুরান জিরা নাজির ৬৮-৭০ টাকা, নতুন জিরা নাজির ৬৬-৬৮ টাকা, কাটারি নাজির পুরান ৭০-৭২ টাকা, নতুন কাটারি নাজির ৬৮-৭০ টাকা, পুরান কাটারি ভোগ নাজির ৭৬ টাকা, নতুন কাটারি ভোগ নাজির ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি পোলাও চাল চিনিগুড়া বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা।

তেলের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি লিটার তেল রুপচাঁদা ১৩৪-১৩৬ টাকা, সিটি (তীর মার্কা) ১৩২ টাকা, বসুন্ধরা ১৩০ টাকা, চাঁন তেল ১৩০ টাকা, পুষ্টি তেল ১৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ রসুনের দাম কিছুটা নাগালে রয়েছে। কেজিপ্রতি রসুন ১২০ টাকা (চায়না), পেঁয়াজ ৩৫ টাকা (দেশি), পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকায় (চায়না) বিক্রি হচ্ছে। আদা প্রতিকেজি ৬০-৭০ টাকা, খোলা হলুদ প্রতিকেজি ২০০ টাকা ও খোলা মরিচ প্রতিকেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ডালের দামও। মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছানা ডালা ১১০ টাকা, মাসকলাই ডাল ১৬০ টাকা, দেশি মটর ডাল ১২০ টাকা, দেশি সাধারণ ডাল ১১০ টাকা, ডাল ৭৫ টাকায় (থাই) বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দামও এখন চড়া। আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে পিস প্রতি ৫০০-১০০০ টাকায়। মৃগেল মাছ ১৮০-২০০ টাকা, আকারভেদে প্রতিকেজি তেলাপিয়া ১২০-২০০ টাকা, আকারভেদে সিলভার কার্প প্রতিকেজি ১৫০-২০০ টাকা, বাইন মাছ ৪৫০-৫৫০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৬০০-৭০০ টাকা, সরপুঁটি ১৫০-২৫০ টাকা, বোয়াল ৪৫০-৬৫০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৪০০-৫০০ টাকা, আকারভেদে পাঙ্গাশ ১৫০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, পোয়া ৩০০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৫০০ টাকা, টাকি ২৫০-৩০০ টাকা, শোল ৪০০-৫০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

সূত্রাপুর বাজারের মুরগি বিক্রেতা খাজা ফরিদপুর ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‌‌‘দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কমে। খামারিরা বিভিন্ন কারণে মুরগির দাম বাড়াচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা আব্দুল সাত্তার বলেন, ‘ক্রেতা নাই আপনিও দেখছেন, দাম বেশি বাড়ে নাই তবু ক্রেতা নাই। মৌসুমি সবজির চাহিদা আছে। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে।’

সূত্রাপুর বাজারের চাল বিক্রেতা পূবালী ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী সুনীল সাউ বলেন, ‘ক্রেতা কমে গেছে। দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে না।’

বাজার করতে আসা ক্রেতা সাদেক হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে। যাই কিনতে যাই দাম বাড়তি। আমাদের মধ্যম আয়ের মানুষের জন্যে এ দাম অসহনীয়।’

এসএসএইচ