জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য আসন্ন বাজেটে কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বক্তরা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে তামাক পণ্যের করা ও মূল্য বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

বক্তারা বলেন, কার্যকরভাবে করারোপের অভাবে বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিগারেটের ব্যবহার প্রায় একইরকম রয়েছে। উপরন্তু বর্তমান তামাক কর কাঠামো অত্যন্ত জটিল যা তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণের পথে একটি বড় বাধা। আর এজন্য এই কর কাঠামোকে সহজ করতে হবে। এটা করে যথাযথ পদ্ধতিতে তামাক কর বৃদ্ধি করলে তামাকের ব্যবহার কমাতে তা কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন আক্তার রিনির সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে যখন ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, তখন এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য বর্তমান শুল্ক কাঠামো সহজ করা এবং এ অঞ্চলের সর্বোত্তম ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারের শুল্ক আয় বৃদ্ধি করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শতকরা হিসেবে নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। কারণ ২০২০-২১ অর্থবছরের হিসাব অনুসারে মোট যে সিগারেট বিক্রি হয় তার সবচেয়ে বড় অংশ (৭৫ শতাংশ) হলো নিম্ন স্তরের সিগারেট।

প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ফলাফল হিসেবে বলা হয়, সরকার যদি তামাক কর বৃদ্ধি করে তবে সিগারেট ব্যবহারকারির অনুপাত ১৫.১% থেকে ১৪.০৩% হবে। ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক সিগারেট ব্যবহার ছেড়ে দেবেন ও ৯ লাখ তরুণ সিগারেট ব্যবহার শুরু করা থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া ৮ লাখ ৯০ হাজার অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে। আর ৯ হাজার ২শ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে সিগারেট বিক্রি থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি। আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী, সিটিএফকে বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম এবং তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।

এনআই/এনএফ