দেশে এখন পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি কটন ভিত্তিক। কিন্তু কটনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির সুযোগ কমে আসছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

বিজিএমইএ এবং ওয়াজির এডভাইজরসের ‘বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের জন্য নন কটন টেক্সটাইল এবং পোশাকের ফাইবার ডাইভারসিফিকেশন স্টাডি’ বিষয়ে একটি গবেষণা সম্পাদনের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি এসব কথা বলেন।

রোববার (২৯ মে) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এবং ওয়াজির এডভাইজরসের বিজনেস ডিরেক্টর বরুন বৈদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

ফারুক হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি কটন-ভিত্তিক। কিন্তু কটন-ভিত্তিক পণ্যের প্রবৃদ্ধি ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং সামনের দিনগুলোতে আমাদের জন্য এই প্রাকৃতিক ফাইবারের (কটন) মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির কম সুযোগই রয়েছে। কারণ, বৈশ্বিক ফ্যাশন প্রবণতা বর্তমানে কটন থেকে ম্যানমেইড ফাইবারে ব্যাপকভাবে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখন পোশাক বাজারের এই অংশে আমাদের প্রবেশ করার সময় এসেছে এবং এখানে এই গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ওয়াজির এডভাইজরসের বিজনেস ডিরেক্টর বরুণ বৈদ বলেন, বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইলের চাহিদা ম্যানমেইড ফাইবারের দিকে দ্রুতগতিতে ধাবিত হচ্ছে। কেননা এটি অনেক বেশি ব্যবহার করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য,  জনপ্রিয়তা এবং খেলোয়াড়দের পোশাক হিসেবে পণ্যগুলোর জনপ্রিয়তার কারণে ম্যানমেইড ফাইবারের প্রবৃদ্ধি ক্রমেই বাড়ছে। 

অনুষ্ঠানে বলা হয়, গবেষণার উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের জন্য নন-কটন টেক্সটাইল এবং পোশাকের সম্ভাব্য সুযোগ চিহ্নিত করা এবং এই অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী অবস্থান তৈরির বিষয়ে কৌশলপত্র প্রণয়ন করা। এই গবেষণাটি নন-কটন পোশাক বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ করায়ত্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোও চিহ্নিত করবে।

এটি জটিলতা, সম্পদ এবং বাণিজ্যের পরিমাণের পরিপ্রেক্ষিতে নন-কটন পণ্যের বিভাগ বিশ্লেষণ করবে, সেইসঙ্গে নন-কটন পোশাকের অর্থনৈতিক, চাহিদা এবং টেকসইগত দিকও পর্যবেক্ষণ করবে।

গবেষণায় পণ্য, প্রযুক্তি, দক্ষতা, ব্যয় প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রতিযোগী সক্ষমতা এবং অন্যান্য সম্পদের প্রাপ্যতা মূল্যায়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের নন-কটন পণ্য সরবরাহের চ্যালেঞ্জগুলোও চিহ্নিতও করা হবে। এছাড়া এটি নন-কটন টেক্সটাইল এবং পোশাক বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরিতে প্রস্তুতকারক, বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন অংশীদার এবং অন্যান্য প্রভাবশালীদের জন্য একটি পথনকশা তৈরি করবে।

বিজিএমইএ এ ধরনের প্রবণতা বিবেচনায় নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক এবং বাংলাদেশের জন্য কটন ক্যাটাগরি ছাড়িয়ে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ নির্ধারণ করে দিয়ে যথার্থ কাজ করেছে। বিজিএমইএ এর সহায়তায় ওয়াজির এডভাইজরস শিল্পের জন্য একটি কাঠামো তৈরি করবে, যাতে করে নন-কটন ক্যাটাগরিতে সুযোগগুলো চিহ্নিত করা যায় এবং তা সঠিক ব্যবহার করা যায়। এই গবেষণাটি নীতি নির্ধারকদের জন্যও গাইড হিসেবে কাজ করবে। 

এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় আইএফসি এর পার্টনারশিপ ফর ক্লিনার টেক্সটাইল প্রোগ্রাম অর্থায়ন করবে এবং ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা) ও বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের মাধ্যমে ডেনমার্ক সরকার সহযোগিতা করবে।

এমআই/আইএসএইচ