যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পায়নের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পায়নের ভূমিকা অপরিসীম। তবে এ কথা সত্য যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পখাত এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। কিন্তু নিরন্তর সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

রোববার (২৯ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার-২০২০ এর ট্রফি ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং এফবিসিসিআই-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাই দেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলে এ অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কথা জোরালোভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। বর্ধিত উৎপাদনশীলতা দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, স্বনির্ভর অর্থনীতি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের অন্যতম উপায়। তাই দ্রুত শিল্পায়ন তথা জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জাতীয় সমঝোতা ও প্রতিশ্রুতি আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ২০২০ সালের জন্য জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে পাঁচ ক্যাটাগরির ২৬ প্রতিষ্ঠানকে ‘ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ এবং একটি ব্যবসায়ী সংগঠনকে ‘ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ দেওয়া হয়।

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে খাদ্যশিল্প খাতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে কোকাকোলার বাজারজাতকারী কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজেস। দ্বিতীয় হয়েছে প্রাণ গ্রুপের হবিগঞ্জ এগ্রো। একই ক্যাটাগরিতে ইস্পাত ও প্রকৌশল খাতে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স প্রথম, শেলটেক দ্বিতীয় ও রানার অটোমোবাইলস তৃতীয় হয়েছে। টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতে প্রথম হয়েছে এনভয় টেক্সটাইল। দ্বিতীয় অবস্থানে এম এম ইস্পাহানির পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস। তৃতীয় হয়েছে করণী নিট কম্পোজিট।

বৃহৎ শিল্পের সেবা খাতে নিটল ইন্স্যুরেন্স প্রথম হয়েছে। দ্বিতীয় হয়েছে মীর টেলিকম। তৃতীয় ডিজিকন টেকনোলজিস। আইটি খাতে একমাত্র সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেডকে পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। কেমিক্যাল খাতে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস প্রথম, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) দ্বিতীয়, আর স্কয়ার টয়লেট্রিজ তৃতীয় পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়েছে।

মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরির ইস্পাত ও প্রকৌশল খাতে প্রথম হয়েছে প্রাণ গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান সিলভান টেকনোলোজিস। টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতে প্রথম পুরস্কার মাসকোটেক্সকে দেওয়া হয়েছে। এই খাতে ইনডেক্স এক্সেসরিজ দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

আইটি খাতে একমাত্র মিলেনিয়াম ইনফরমেশন সল্যুশনক পুরস্কার পেয়েছে। কেমিক্যাল খাতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বিআরবি পলিমার। আর দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে জিএমই এগ্রো।

ক্ষুদ্রশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে আহমেদ ফুড প্রোডাক্টস। তোহফা এন্টারপ্রাইজ পেয়েছে দ্বিতীয় পুরস্কার। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে জারমার্টজ। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে সুপার স্টার ইলেকট্রনিক্স পুরস্কার পেয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্যাটাগরিতে ইস্টার্ন টিউবসকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে ইনস্টিটিউশনাল এপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।

এসআই/জেডএস