হাওর এলাকায় ধান নষ্ট হ‌য়ে‌ছে এজন্য চা‌লের দাম বে‌ড়ে‌ছে, এখন মোবাইল কোর্ট যাওয়ার পর কেজিতে দাম পাঁচ টাকা ক‌মি‌য়ে দেওয়া হচ্ছে। সরকার ধরাধ‌রি কেন কর‌বে? ধরাধ‌রির যে সি‌স্টেম চালু হয়েছে এটা ঠিক না। এখা‌নে যারা আ‌ছেন তা‌দের ৯৮ থে‌কে ৯৯ শতাংশ ভা‌লো। দু'এক জনের দা‌য়িত্ব কেন আমরা সবাই নেব। এখা‌নে আমরা যারা এ‌সে‌ছি সবাই বু‌ঝি। আ‌মি নি‌জেও ধান উৎপাদন ক‌রি। কত খরচ কীভা‌বে কী হয় আ‌মি তা জা‌নি।

তিনি বলেন, এখা‌নে ব্যবসায়ীরা সরকা‌রের অ‌ভিযান‌কে স্বাগত জানা‌চ্ছেন। তারা বল‌ছেন সরকারকে ধন্যবাদ জানা‌চ্ছি, সরকার ধর‌ছে দাম কম‌ছে। এটা কি ঠিক? য‌দি সমস্যাই থাক‌তো তাহ‌লে অ‌ভিযা‌নের পর দাম কম‌তো না।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘নিত্যপণ্যের আমদানি, মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চাল ব্যবসায়ীদের এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা এফবিসিসিআই সভাপতিকে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের (চাল ব্যবসায়ী) হয়রানি ও ধরপাকড় করা হচ্ছে। এর জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি চাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়িয়ে দেবেন আর সরকার ধরপাকড় করবে না, এটা কি হয়। এখন ধান উঠছে, দাম কমছে, এ অবস্থায় চালের দাম কমার কথা। আপনি-আমি ব্যবসা করে খাই, ব্যবসা করব। তার মানে কেজিতে ১০/১৫ টাকা বাড়াবেন এটা কি হয়। আপনি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেশিন আনছেন এতে খরচ কমার কথা, তাহলে দাম কেন বাড়বে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি ব‌লেন, ‘আসলে চা‌লের সংকট না, সবার কাছে চাল আছে। ৫ থে‌কে ১০ শতাংশ ধান নষ্ট হয়েছে, তাতে এখনই কেন দাম বাড়বে, এটা তো আরও সাত মাস পরে বাড়বে। সুযোগ পেলেই দাম বাড়বে এটা সরকার বা আমরা কেউ সহ্য করবে না। চাল ব্যবসা করে গুলশানে বাড়ি করছে, বিভিন্ন স্থানে আরও ৮/১০টি করে বাড়ি আছে, আর সব সময় বলছেন লোকসান। তাহ‌লে সম্পদ কীভা‌বে ক‌রেন।’

তিনি বলেন, ‘খারাপ ভালো ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আছে। পেঁয়াজ আমদানি ভারত থেকে বন্ধ করার পরের দিনই ১৫ টাকা কেজিতে দাম বেড়ে গেল। অথচ আমদানির পেঁয়াজের দাম বাড়বে আরও পরে। কিন্তু দাম বাড়িয়ে দিলেন আমাদের ব্যবসায়ীরা।’

প‌রে এক প্র‌শ্নের উত্ত‌রে এফবিসিসিআই সভাপতি ব‌লেন, ‘চা‌লের দাম মিল মা‌লিকরা বা‌ড়ি‌য়ে‌ছেন। কারণ তারা ম‌নে ক‌রেছেন ধান নষ্ট হ‌য়ে‌ছে ঘাট‌তি হ‌বে।’ 

এসময় যারা এ কারসা‌জি কর‌ছেন তা‌দের সতর্ক ক‌রেন ব্যবসায়ী‌দের শী‌র্ষ এ নেতা। একইস‌ঙ্গে বাজা‌রে সরকা‌রি ম‌নিট‌রিং অব্যাহত রাখারও দা‌বি জানান।

দেশে প্যাকেটজাত চাল বিক্রি নিষিদ্ধের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দীন বলেন, দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। সবকিছু আধুনিকায়ন হচ্ছে সেখানে প্যাকেটজাত চাল বিক্রি নিষিদ্ধ করা সমর্থন করি না। তবে দাম ও পরিমাণ নির্ধারণ করে দেবে।  

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীদের মানবিক হতে হবে। এটি হতে পারলে ব্যবসা ভালো হবে। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো পণ্য কিনলে সেটার দাম বেড়ে যায়।

এসআই/জেডএস