চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ১০ মাস পেরিয়ে গেছে। জুলাই-এপ্রিল সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে আছে ৩২ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। যদিও রাজস্ব আদায়ে ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে।

প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক মনে হলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগে পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যদিও আমদানির ওপর ভর করে অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে বেশ। এ খাতে সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে ইএফডিসহ নানা পদক্ষেপেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য মেলেনি ভ্যাট আদায়ে। দশ মাসে ভ্যাট আদায়ের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ, আয়করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

এ বিষয়ে এনবিআর পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন বলেন, রাজস্ব আদায়ে তিন বিভাগেই প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক। আশা করছি, রাজস্ব আহরণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন হবে।

এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার ৩১ কোটি টাকা, যেখানে এনবিআর আদায় করেছে ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। 

লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৩২ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসে রাজস্ব আয়ের পূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। যদিও এ নিয়ে কিছু বলছে না এনবিআর।  

অবশ্য ঘাটতি বাড়লেও গত ২০২১-২২ অর্থবছরের ‍তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ২১ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।

এনবিআর সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮১ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৩ হাজার ৬০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ঘাটতি ৭ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা।

একই সময়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৮৪ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা ৫৬ লাখ টাকা। দশ মাসে ভ্যাট আদায়ের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার কোটিরও বেশি। আয়কর ও ভ্রমণ খাতে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৬৯ হাজার ৭৭৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ আয়করে ঘাটতি ৮ হাজার কোটি টাকা। 

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটে লক্ষ্য সবচেয়ে বেশি। এ খাতে লক্ষ্য এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। আয়কর ও ভ্রমণ করে লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। আমদানি শুল্কে লক্ষ্যমাত্রা ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।

আরএম/আরএইচ