কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাজারে মসলার কোনো সংকট নেই, তাই দাম বাড়ারও কোন শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ।

বুধবার (৮ জুন) মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে এফবিসিসিআই কর্তৃক আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ আশ্বাস দেন তিনি। 

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো. বশির উদ্দিন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে যদি কোনো ব্যবসায়ী অসৎভাবে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালান, তবে সমিতির নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ব্যবসায়ীদের সৎভাবে ব্যবসা পরিচালনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বই একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি পার করছে। এমন সময়ে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদর অসততার দায় এফবিসিসিআই নেবে না। প্রায় ৯৯ শতাংশ সৎ ব্যবসায়ীদের সম্মিলিতভাবে অসৎ ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান সভাপতি। 

এ সময় তিনি খুচরা বাজারের পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে দোকান মালিক সমিতিকে এগিয়ে আসার তাগিদ দেন। একই সঙ্গে অন্যান্য দেশের মতো উৎসবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরও পণ্যের দাম কমানোর আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কন্ট্রোল অব এসেনশিয়াল কমোডিটি আইনটি অনেক আগের। গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তাই বহু পুরনো এসেন্সিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্টটি সংশোধন করা প্রয়োজন।  এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে আলোচনাও হয়েছে বলে জানান তিনি।

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এজন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কর-শুল্কের বোঝা কমিয়ে বিলাসী দ্রব্যের ওপর বাড়তি কর আরোপ করা যেতে পারে।

সম্প্রতি গ্যাসের যৌক্তিক মূল্যহার পুনঃনির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে সভাপতি বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো ১০০ শতাংশের বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু শিল্পের সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পখাতে খুবই সামান্য পরিমাণে দাম বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও কুটির খাতে গ্যাসের দাম কমানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত দেশের শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে বলে মন্তব্য করেন সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ১ শতাংশ অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজকে অপবাদ নিতে হচ্ছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত। রোজার শেষ দিকে সয়াবিন তেলের সংকটে যেমন মানুষ কষ্ট পেয়েছিল এবার কোরবানিতে যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর পরিচালক আবু মোতালেব, হারুন অর রশিদ, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবলু।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন. এম এ রাজ্জাক খান রাজ। সভা শেষে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন পাইকারি বাজার পরিদর্শন করেন এফবিসিসিআই নেতারা।

এসআই/এসকেডি