‘সরকারি কলেজসমূহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অতিরিক্ত প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার চতুর্থ বাজেট। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সারা দেশে ২০০টি সরকারি কলেজে ২ হাজার ৬০৭টি (মাল্টিমিডিয়াসহ) শ্রেণিকক্ষ, ২০০টি ল্যাংগুয়েজ কাম আইসিটি ল্যাব, ১ হাজার সায়েন্স ল্যাব, ৪৬টি হোস্টেল নির্মাণ, আসবাবপত্র, অফিস সরঞ্জাম ও আইসিটি উপকরণ সরবরাহ করার লক্ষ্যে ‘সরকারি কলেজসমূহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অতিরিক্ত প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের ৩২৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বই-পুস্তক, খেলাধুলার সরঞ্জাম, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, অফিস যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার লক্ষ্যে ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অতিরিক্ত প্রায় ৩.২৯ লাখ শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে তিনটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ৪৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এএজে/এসএসএইচ