দেশের ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করছে সরকার। এসব জোনে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, দেশের সব অংশে কর্মসংস্থানের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করছে, যেখানে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অন্যদিকে মৎস্য ও পশুপালন খাতে ভূমিহীন, দরিদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদেরকে আয়বর্ধনমূলক কাজে সম্পৃক্ত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

সরকারের সঠিক নীতি ও ফলদায়ী কর্মপরিকল্পনার ফলে দেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানে পারদর্শী মানুষের বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিং পেশায় যুক্ত আছেন।

সরকার ২০২৫ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান ৩০ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৮৭ হাজার ২৩০টি গ্রামভিত্তিক উন্নয়নের যে রূপরেখা প্রণয়ন করা হচ্ছে, তাতে আমরা কর্মসংস্থানের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এসএইচআর/এসএসএইচ