প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানি পণ্যের ওপর উৎসে করহার দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফলে এ খাতে কর বেড়ে দ্বিগুণ হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ঘোষণায় এ তথ্য জানান। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আহরণের প্রধানতম খাত হচ্ছে উৎস কর সংগ্রহ। আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। রাজস্ব নীতি প্রণয়নে উৎসে করহার যৌক্তিকীকরণের গুরুত্ব সর্বাধিক। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যমান কর্পোরেট করহার বিবেচনায় ব্যাংক সুদের উৎসে করহার কোম্পানি করদাতার জন্য ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ এবং রপ্তানি পণ্যেরর ওপর উৎসে করহার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশে বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনিবাসী করদাতার নিকট ব্যান্ডউইথ বাবদ প্রেরিত অর্থের ওপর উৎসে করের হার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। অবৈধ পন্থায় বিদেশে অনিবাসীর বিল পরিশোধ নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে কতিপয় সেবা ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রকার বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে অনিবাসী হতে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তনের প্রস্তাব করছি। নতুন উৎসে কর আরোপের ক্ষেত্র সম্প্রসারণে সরকারি পুকুর বা জলাশয় ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে লিজ ভাড়ার ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর আরোপের প্রস্তাব করছি।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। 

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এমআই/ওএফ